রাজশাহী শিক্ষা দপ্তরের পরিচালকের শাস্তিতে বিক্ষোভ
রাজশাহীর আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তরের পরিচালক ড. কামাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক ড. আবু রেজার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অবিলম্বে অপসারণ ও বিভাগীয় শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বুধবার (৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় নগরীর আঞ্চলিক শিক্ষা ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী সমিতি ফেডারেশন রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখা। ফেডারেশনের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশার সভাপতিত্বে এই কর্মসূচিতে শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তরের এই দুই কর্মকর্তার দুর্নীতি আজ প্রমাণিত সত্য। একাধিক তদন্তে তাদের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তারা এখনও টিকে আছে। শিক্ষকদের অপমান, হেনস্থাকারী দুর্নীতিবাজ এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানান তারা।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তরের পরিচালক ড. কামাল হোসেনের অত্যাচারে সাধারণ শিক্ষকদের শিক্ষা ভবন থেকে কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে যেতে হয়েছে। ড. আবু রেজা দুর্নীতির মহানায়ক। সে এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষকদের ডেকে নিয়ে বলেন, আমি আপনাদের কাজ করে দিব। আর কাজ করে দিতে লাগবে টাকা। আজকে টাকা ছাড়া আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তরের কোন কাজ হয় না।
নওগাঁর একটি কলেজের ৬ জন শিক্ষককে নায্য অধিকার এই দুর্নীতি পরায়ণ কর্তারা দেন নি। পরে টাকা দিয়ে বিষয়টি রফাদফা হয়। বগুড়ার আদমদিঘি কলেজের অধ্যক্ষের এমপিও এর জন্য বিভিন্ন অজুহাতে তিন বার ঘুরানো হয়েছে। পরে টাকার বিনিময়ে কাজ হয়েছে। তারা ঘুষ-দুর্নীতি ছাড়া কিছু বোঝেন না।
বাদশা বলেন, এ ধরনের নোংরা বিষয় নিয়ে মাঠে নামতে হবে তা আমরা বুঝি নাই। এই দুই জন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা শিক্ষার জন্য কি এমন অপরিহার্য যে, তাদের ছাড়া আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তর চলবে না। সরকার শিক্ষার জন্য অনেক ভালো ভালো কাজ করেছে। কিন্তু এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জন্য সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। ভাবমূর্তি নষ্ট হচেছ।
লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তরের এই দুই কর্মকর্তা টিকে আছে দাবি করে বাদশা বলেন, রাজশাহীর এমপিসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের এসব কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিষয়ে বারবার জানানোর পরও শিক্ষক সমাজের ন্যায় সঙ্গত দাবি কেন বাস্তবায়ণ হয় না বুঝি না। আজকে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের তদন্তেও তাদের দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে।
আজকের এই সমাবেশ থেকে আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে চাই। আমাদের দাবি না মানা হলে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষার শেষে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিকী ধর্মঘট, ধর্মঘটসহ আঞ্চলিক শিক্ষাভবনের অভ্যান্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার হুশিয়ারি দেয়া হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল আঞ্চলিক শিক্ষা ভবনের সামনে থেকে বের হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, অধ্যক্ষ রাজকুমার সরকার, অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকসহ উপজেলা কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মধু। এ বিষয়ে আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তরের পরিচালক ড. কামাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক ড. আবু রেজার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এএজেড