৮ বছরে রাজশাহী নগরীর ৮০০ পুকুর ভরাট
হাজারো পুকুরের শহর রাজশাহী। তবে বিগত ৮ বছরে নগরীর ৮০০ পুকুর ভরাট হয়ে গেছে। ২০১৪ সালের বোয়ালিয়া ভূমি অফিসের তথ্যমতে জানা যায়, রাজশাহী নগরীতে প্রায় এক হাজারের মতো পুকুর অবশিষ্ট ছিল। কিন্তু বর্তমানে পুকুরের সংখ্যা ২০০‘র নিচে নেমে গেছে। কখনো প্রকাশ্যে আবার কখনো রাতের অন্ধকারে পুকুরগুলো একের পর এক ভরাট হয়ে চলেছে। এজন্য নগরীর জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় অবশিষ্ট পুকুরগুলোকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবিদসহ সংশ্লিষ্টরা।
‘অস্তিত্ব সংকটে রাজশাহী নগরীর পুকুর/জলাশয়: পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়।
বক্তারা জানান, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) প্রণিত ‘রাজশাহী মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান (২০০৪-২০২৪)’ এ নগরীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুকুরকে সংরক্ষণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করা হলেও পুকুর ভরাট রোধে তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে কোনো ধরনের অনুমতির তোয়াক্কা না করে কতিপয় ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান নগরীর পুকুরগুলো একের পর এক ভরাট করে চলেছে, যেন দেখার কেউ নাই। এমনকি নগরীর কোথাও বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটলে তা নির্বাপণের জন্য জলাশয় খুঁজে পাওয়া মুশকিল। পুকুর/জলাশয় ভরাট করায় দিন দিন নগরীর পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ফলে অতি গরম এবং অধিক শীতের কারণে ধীরে ধীরে নগরীর আবহাওয়া এবং স্বাভাবিক পরিবেশের মারাত্মক ব্যত্যয় ঘটছে।
এ সময় রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় পুকুরসহ সকল ধরনের জলাশয় ভরাটের কার্যক্রম বন্ধ এবং ভরাটকৃত পুকুর বা জলাশয়গুলো পুনরুদ্ধার করে তা সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান সভায় অংশগ্রহণকারীরাও।
এ ব্যাপারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে গেলে পরিবেশের ক্ষতি হবেই। কিন্তু উন্নয়ন করতে গিয়ে পরিবেশের যে ক্ষতি হচ্ছে তার দ্বিগুণ ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থাও করতে হবে। অর্থাৎ উন্নয়নের সময় পরিবেশগত প্রভাব নিরুপণ করতে হবে এবং তা প্রশমনের চিন্তাও আমাদের করতে হবে। তা ছাড়া উন্নয়ন টেকসই হবে না। রাজশাহী নগরীর পুকুর ভরাট রোধে আমরা কাজ করছি। সবাই সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটা চাপ তৈরি করতে পারলে আমাদের সেই কাজ আরও গতি পাবে এবং আগামীতে এই নগরীর পুকুর ভরাট বন্ধে তা সহায়ক হবে।
বুধবার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি ‘বেলা’র আয়োজনে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের প্রফেসর ড. রেদওয়ানুর রহমান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সচিব মশিউর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন।
এসআইএইচ