ঋণ পরিশোধে অটোভ্যান ছিনতাই ও চালককে হত্যা
ব্যাংক ঋন ও এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করার জন্য সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ব্যাটারী চালিত অটোভ্যান ছিনতাই ও চালককে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনায় পুলিশ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামিউল আলম।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বেলকুচি উপজেলার ক্ষিদ্রমাটিয়া গ্রামের শ্রী বলরাম চন্দ্র রাজবংশীর ছেলে শ্রী সঞ্জিত চন্দ্র রাজবংশী (৩৫) ও কামারখন্দ উপজেলার ভারাঙ্গা গ্রামের মৃত বেলাল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিম (৩০)।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপারেশন) বলেন, গ্রেপ্তারকৃত সঞ্জিত চন্দ্র রাজবংশী ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋন নিয়েছেন। ঋনের টাকা তিনি পরিশোধ করতে পারছিলেন না। ঋন পরিশোধ করতে তিনি অটোভ্যান ছিনতাই ও চালককে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা মোতাবেক গত ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় বেলকুচি উপজেলার গাবগাছি নতুনপাড়ার হযরত আলী প্রামানিকের ছেলে ফকির চাঁনের ব্যাটারী চালিত অটোভ্যান ভাড়া নেয় সঞ্জিত চন্দ্র রাজবংশী। পরে ফকির চাঁনকে অপহরন করে উল্লাপাড়া উপজেলার রেলষ্টেশনের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে রশি দিয়ে ফকির চাঁনের গলায় ফাস দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এর পর লোহার রড দিয়ে উপর্যপরি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ গোপন করার জন্য রাস্তার পাশে নিপিয়ার ঘাসের মধ্যে ফেলে অটোভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে ফকির চাঁনের কোন সন্ধ্যান না পেয়ে তাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে পরিবারের সদস্যরা। ২০ অক্টোবর ফেসবুকের মাধ্যমে ফকির চাঁনের নিখোঁজের বিষয়টি জানতে পারেন বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজমিলুর রহমান। তাৎক্ষনিত ওসি ফকির চাঁনের পরিবারকে ডেকে আনেন এবং থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত জিডি করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, নিখোঁজ সংক্রান্ত জিডি করার পর প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার সাথে জড়িত সঞ্জিত চন্দ্র রাজবংশী সনাক্ত করে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেখানো মতে উল্লাপাড়া রেলষ্টেশন থেকে ঘাটিনাগামী পাকা রাস্তার পাশে নিপিয়ার ঘাসের মধ্য থেকে গতকাল রবিবার সকালে ভ্যান চালক ফকির চাঁনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো বলেন, ব্যাটারী চালিত অটো ভ্যানটি ২৪ হাজার টাকায় কামারখন্দ উপজেলার আব্দুর রহিমের কাছে বিক্রি করা হয়। পরে ভ্যানটি উদ্ধার ও আব্দুর রহিমকে আটক করা হয় এবং হত্যার কাজে ব্যবহ্নত লোহার রড উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ফকির চাঁনের ভাই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে দুই জনকে আসামী করে বেলকুচি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এএজেড