এলাকাবাসীর ভরসা বাঁশের সাঁকো
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ফুলজোর শাখা নদী পার হতে হয় প্রতিদিন এলাকাবাসীকে। আর এ অবস্থা চলে আসছে অর্ধশত বছরেরও বেশি সময় ধরে। উপজেলার বড়হর ইউনিয়নে সড়াতৈল গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া এই শাখা নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মানের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয় লোকজন পাকিস্তানের সময় থেকেই।
একবছর আগে স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে এখানে সেতু নির্মানের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হলেও আর কোন অগ্রগতি হয়নি। সড়াতৈল গ্রামবাসীকে এখনও তৈরি করতে হচ্ছে বাঁশের সাঁকো। আর এই সাঁকো পারাপারে এলাকাবাসীকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
সড়াতৈল গ্রামেবাসী জানান, প্রতিবছর জুন মাস থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এই নদীতে পানি থাকে। ফলে তারা নদীর উপর স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। এই সাঁকোর উপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সড়াতৈল গ্রাম ছাড়াও পার্শ্ববর্তী পাঁচিলা, বাগদা, রশিদপুর, খাসচর জামালপুর এবং অলিপুর গ্রামের লোকজনকে এই শাখা নদী পার হয়ে সড়াতৈল মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, সড়াতৈল প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা, সড়াতৈল কেজি স্কুল, সিরাজগঞ্জ রোড, উল্লাপাড়া উপজেলা সদর, পৌর বাজার, সাব রেজিষ্ট্রি অফিস ও পাঁচিলা বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয়।
অনেক সময় স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই সাঁকো পার হতে গিয়ে নদীতে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পারাপারের এ দুরাবস্থা চলে আসছে পাকিস্তান আমল থেকেই। সড়াতৈল গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষাবিদ আব্দুল মান্নান তালুকদার এবং সমাজকর্মী বাবলা তালুকদার, খাসচর জামালপুরের শিক্ষক শাহিন আলাম জানান, উক্ত শাখা নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মান করার জন্য স্থানীয় লোকজন অনেকবার বহড়হর ইউনিয়ন পরিষদ এবং উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন জানিয়েছেন।
এক বছর আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হাসান নান্নুর সহযোগিতায় উল্লাপাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বাঁশের সাঁকোর স্থানটি পরিদর্শন করে একটি ৬০ ফুট লম্বা গার্ডার সেতু নির্মান প্রকল্প প্রস্তুত করে ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর সম্ভাব্য সেতু নির্মান স্থানের মাটিও পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তারপর আর এব্যাপারে কোন অগ্রগতি এলাকাবাসীর চোখে পড়েনি। ফলে এ অঞ্চলের মানুষের এই শাখা নদী পারাপারের দুর্ভোগ আজও অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, সড়াতৈল গ্রামের পাশে ফুলজোর শাখা নদীর উপর ৬০ ফুট লম্বা একটি গার্ডার সেতু নির্মানের প্রকল্প প্রনয়ণ করে তা বাস্তবায়নের জন্য তারা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই সেতু নির্মান স্থানের মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। আগামীতে টেন্ডার আহবানের প্রস্তুতি চলছে। চলতি বছরের শেষের দিকে সেতু নির্মানের কাজ শুরু হবে বলে তিনি জানান।
এএজেড