রামেকের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট স্থগিত, মামলা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকালে হাসপাতালের পরিচালক ও মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ধর্মঘট পত্যাহারের বিষয়টি জানান। এছাড়া রামেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন মেডিকেলের পক্ষে রাজপড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইমরান হোসেন জানান, শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত ধর্মঘট শীথিল করা হয়েছে। শুক্রবার যথারীতি অন্য সময়ের মতো ইন্টার্নরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাবেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে মামলা করেছে সেখানে আসামীদের আগামী ২৪ ঘন্টা অর্থাৎ শুক্রবারের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় শনিবার (২২ অক্টোবর) মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। সেখান থেকে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে।
এদিকে, ধর্মঘটের স্থগিতের ঘোষণার পরপরই চিকিৎসা কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এদিন সন্ধ্যায় রামেক হাসাপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ৮ নম্বর ওয়ার্ড পুরো ক্যাম্পাস থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ৮ নং ওয়ার্ডে সন্ধ্যায় সিনিয়র ডা. আয়েশা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিলেন। তবে তিনি প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে চান নি।
তবে রোগী ও সেবা সংশ্লিষ্টরা জানান, হামলার পরপর কিছু সময়ের জন্য সাধারণ রোগীরা জিম্মি দশার মধ্যে ছিলেন। ইন্টার্নরা চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সিনিয়র ডাক্তাররা রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন। এর ফলে রোগীদের তেমন কোন বিড়ম্বনায় পড়তে হয় নি।
রাব্বি হোসেন নামের রোগীর এক স্বজন জানান, তিনি ১৫ দিন থেকে হাসপাতালে আছেন। এর মধ্যে সিনিয়র ডাক্তার দিনে একবারের বেশি দুই বার দেখা যায় নি। এমনও হয়েছে সিনিয়র ডা. আসেনই নি। তবে বৃহস্পতিবার কয়েক দাফায় সিনিয়র ডাক্তার এসে রোগী দেখেছেন। রুমে সবসময় একজন করে থাকছেন। সুতরাং তেমন কোন দুর্ভোগ এখন নেই।
রামেক হাসপাতালের পক্ষে দুপুরে রাজপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র শাহরিয়ারের মৃতুকে কেন্দ্র করে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রের নেতৃত্বে ৩ শতাধিক ছাত্র হাসপাতালে তাণ্ডব চালিয়েছে। এসময় তারা চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মচারীদের গালিগালাজ, লাঞ্চিত ও মারধর করে সরকারি কাজে বাধাদান ও সম্পদ নষ্ট করে। এ বিষয়ে মামলা এজাহারভুক্ত করতে অনুরোধ জানানো হয়।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে আবাসিক হলের ছাদ থেকে পড়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন রাবি শিক্ষার্থী শাহরিয়ার। চিকিৎসা দিতে বিলম্ব, ডাক্তারদের দুর্ব্যবহার ও শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগে হাসপাতালে ভাংচুর চালায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এরপর রাত ৩ টা পর্যন্ত হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে রামেকের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানান। পরে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিষয়ে ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
এএজেড