নওগাঁয় খেজুর রস আহরণ শুরু
নওগাঁয় শুরু হয়েছে খেজুর রস আহরণ। এই রস আহরণে গাছিরা এখন যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। শীত মৌসুমে আবহমান বাংলায় খেজুর রস আহরণ, খেজুর গুড় আর নবান্নের উত্সব একটি প্রাচীন ঐতিহ্য।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে জানা গেছে, পতিত জমি, ভিটা, জমির আইল, রেললাইনের ধারসহ বিভিন্ন জায়গায় খেজুর গাছ রয়েছে। এসব খেজুর গাছ রোপণ না করলেও প্রাকৃতিকভাবে হয়েছে। এক সময় জেলায় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। খেজুর গাছ দিয়ে কোনো আসবাবপত্র তৈরি না হওয়ায় অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তার পরও গ্রামাঞ্চলে এখনো প্রচুর খেজুর গাছ রয়েছে। শীত মৌসুমে এসব খেজুর গাছ থেকে খেজুর রস আহরণ করা হয়। আর এ আশায় রস সংগ্রহের অপেক্ষায় থাকে গাছিরা।
অগ্রহায়ণ মাসে নতুন ধান উঠে প্রতিটি ঘরে। নতুন ধানের চালের গুঁড়া দিয়ে খেজুর রস ও গুড় দিয়ে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে গ্রামগঞ্জে। শীত মৌসুমে খেজুর রস সংগ্রহ করে বড় পাত্রে ঢেলে আগুনে জাল দিয়ে লালি, দানাদার ও পাটারী গুড় তৈরি করেন গাছিরা। এ ছাড়াও শীতে প্রতিটি ঘরে নতুন চালের আটা আর খেজুর গুড়ের পিঠা-সাপটার খাওয়ার ধুম পড়ে। আর শুরু হয় শীতের পিঠা তৈরি করে মেহমান আপ্যায়ন।
আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা এলাকার রহমত, পুরাতন আহসানগঞ্জ স্টেশন এলাকার রহমান, বিশা ইউনিয়নের শরাফত, রাণীনগর উপজেলার আবুল কালাম, মালসনের শরিফুরসহ বেশ কয়েকজন গাছি জানান, গত কয়েক বছর আগে যে পরিমাণ খেজুর গাছ ছিল বর্তমানে তা আর নেই। শীতের আগাম বার্তা আসা মাত্র বিশেষ করে কার্তিক মাসে তারা গাছ তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
তারা আরো জানান, অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ-এই তিন মাস খেজুর রস সংগ্রহ করা হয়। সপ্তাহের দুই থেকে তিন দিন রস সংগ্রহ বন্ধ রাখা হয়। এর ফলে গাছের রস ভালো হয়। গাছের মালিকদের তিন মাসে ১০ কেজি করে গুড় দিতে হয়। রস থেকে তৈরি গুড় গাছিরা বাজারে বিক্রি করেন। গাছিরা তিন মাসে একটি গাছের রসের গুড় বিক্রি করে দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় করেন।
এসআইএইচ