মিনিকেট নিয়ে মুখোমুখি সরকার ও চাল ব্যবসায়ীরা
মিনিকেট নামে ধান আছে। সেই ধান থেকে মিনিকেট চাল উৎপাদন হয়। চাল কেটে-ছেঁটে ছোট ও সরু করার ধারণা ভ্রান্ত বলে দাবি করেছেন নওগাঁর চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে নওগাঁয় ধান্য চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির নিজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ধান্য চাউল আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ৩০ বছর সময় ধরে বাজারে কমবেশি মিনিকেট চাল আছে। অথচ কখনো কখনো বলা হচ্ছে মিনিকেট নামে কোনো ধান নাই। নওগাঁ, নাটোর ও কুষ্টিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে মিনিকেট জাতের ধান পাওয়া যায়। তাহলে এটি কোন ধান? প্রচার করা হচ্ছে ‘মোটা চাল চিকন করে মিনিকেট চাল হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে’। বর্তমানে কথাটি বদলে নতুনভাবে বলা হচ্ছে বিআর-২৮, বিআর-২৯ জাতীয় ধানের চাল সুপার পলিশ করে মিনিকেট চাল হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে মোটা বা অন্য জাতের কোনো চাল বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। মোটা চাল ও সর্বোৎকৃষ্ট মানের চালের (মিনিকেট) বাজারমূল্য পার্থক্য প্রতি কেজি ১৫-১৭ টাকা। বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতীয় চালের দামের পার্থক্য ৭-১০ টাকা প্রতি কেজি। মোটা চাল ছাঁটার মাধ্যমে চিকন করে মিনিকেট চাল হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে। বাস্তব চিত্রটি এ বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
নিরদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন মহল ব্যবসায়ীদের উপর দায় চাপিয়ে বলেন, মোটা জাতের চাল কেটে মিনিকেট চাল তৈরি করা হয়। কিন্তু দেশ-বিদেশে চাল কাটা কিংবা সরু করার কোনো মেশিন আবিষ্কৃত হয়নি। এভাবে প্রতিনিয়তই ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কিছু ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, বলা হয় মিল মালিকরা মজুত করে চালের দাম বৃদ্ধি করছে। আপনারা জানেন চাল উৎপাদনের কাঁচামাল হচ্ছে ধান। ধানের দাম ও আনুষঙ্গিক উৎপাদন মিলিয়ে চালের দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে। ধানের দাম বৃদ্ধি পেলে চালের দাম স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাবে এটাই বাস্তবতা। সরকারের পর্যায়ে থেকে ভোক্তা পর্যায়ে আমাদের সবারই চিন্তাভাবনা কৃষক তাদের উৎপাদিত ধানের ভালো দাম পাবে। অন্যদিকে চালের দাম সস্তা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মিলমালিক ও ব্যবসায়ীরা কোনো রেশনের দোকান বা দাতব্য খানা খুলি নাই। বর্তমানে চলমান ইরি মৌসুমের শুরুতে ধানের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। স্বাভাবিকভাবে চালের দামও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই অবস্থায় খাদ্য বিভাগ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ নিজস্ব জনবল নিয়োগ করে সারা দেশে মিলমালিক ব্যবসায়ীদের গুদামে মজুতবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। ফলাফলে দেখা যায়, দু-একটি প্রতিষ্ঠান ব্যতীত কোথাও কোনো বাড়তি মজুত বা অবৈধ মজুত পায়নি। যা দিয়ে খোলা বাজারে চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তাই চালের দাম উঠানো-নামানোর বিষয়ে বাজার মনিটরিং জোরদারের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেলকন গ্রুপের মালিক বেলাল হোসেন, জেলা অটোমেটিক মিলমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলামসহ চাল ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে খাদ্যমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রী বলেছিলেন, মিনিকেট নামে কোনো চাল নেই। গেল সপ্তাহে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, মিনিকেট নামে কোনো চাল বিক্রি করা যাবে না।
এসজি