নাটোরে ইমাম-খতিবকে মারধরের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৫
নাটোর সদর উপজেলার সিংগারদহ পশ্চিম পাড়া এলাকায় মসজিদ কমিটির দ্বন্দ্বে ইমাম ও খতিবকে মারধরের ঘটনায় উভয়পক্ষ মামলা করেছে। মামলার পর উভয়পক্ষের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন, ওই গ্রামের তালহা, আসাদুল, সোহেল, উজ্জ্বল ও শরিফুল।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এসআই সাজ্জাদ হোসেন রবিবার (৯ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এসআই সাজ্জাদ হোসেন জানান, ওই ইমাম-খতিব পক্ষে মামলা দায়ের করেন ইমাম আব্দুল জব্বার। আর প্রতিপক্ষের মামলা করেন সাবিহা। ওই উভয় মামলায় শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার তাদের আদালতে চালান দেওয়া হয়।
খতিব হুজাইফার বাবা নিয়াজ খাঁন জানান, হুজাইফা এখনো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) চিকিৎসাধীন। শনিবার তার সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। রবিবার দুপুরের দিকে ওই রিপোর্ট দেখবেন ডাক্তার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তারা মামলায় যাদের আসামি করেছেন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। কিন্তু বাঁচার জন্য প্রতিপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা করেছে ওই মামলায়, তাদের পক্ষের তালহা ও আসাদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি নাছিম আহম্মেদ জানান, উভয় মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত ওই গ্রামের মসজিদের ইমাম আবদুল জব্বার প্রায় ৩৩ বছর ধরে ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন। একই গ্রামের খবির উদ্দিন মোল্লার ছেলে ওই মসজিদের সাবেক সভাপতি জয়নালকে কিছুদিন আগে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কমিটি থেকে বাদ দেন মুসল্লিরা। এরপর নতুন কমিটিতে জয়নালের ছোট ভাই হুসেন আলীকে সেক্রেটারি আর তাকে (ইমামকে) সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন মুসল্লিরা। এরপর থেকে তার উপরে ক্ষিপ্ত ছিলেন সাবেক সভাপতি জয়নাল। সম্প্রতি তার জামাই হুজাইফা মাসুদ জুম্মার নামাজ পড়তে ওই মসজিদে এলে মুসল্লিদের অনুরোধে তিনি বক্তব্য রাখেন। সুদ, ঘুষ, আমানতদারী ইত্যাদি বিষয়ে বক্তব্য শুনে মুসল্লিরা মাসুদকে প্রতি জুম্মার নামাজ পড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। মুসল্লিদের অনুরোধে তিনি অবৈতনিক খতিবের দায়িত্ব পালন করছিলেন ওই মসজিদে। কিন্তু ওই বক্তব্যগুলো তাদের উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে এমন ধারণা করে হুজাইফার উপরেও ক্ষিপ্ত হন জয়নাল। তার জামাই যাতে শুক্রবারের নামাজ না পড়ায় সেজন্য বিভিন্ন জায়গায় তর্জন গর্জন করেন জয়নালরা।
শুক্রবার ফজরের নামাজ পড়ে হুজাইফাসহ তারা মসজিদে তালিম করছিলেন। তালিম শেষে তারা মসজিদ থেকে বের হলে পূর্বপরিকল্পনা মতো দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কদম আলী, শাহ জামাল, হোসেন আলী, মাজেদুল ও এস্ক্যানকে সঙ্গে নিয়ে হামলা চালান জয়নাল। এসময় তাকে মারতে মারতে খেজুরের কাটার মধ্যে ফেলে দেন। তাকে বাঁচাতে ছুটে এলে হুজাইফাকে হাসুয়া দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি রক্তাক্ত ও জখম হন। এসময় তাকে বাঁচাতে এসে একই এলাকার অধিবাসী রাজশাহী কলেজের স্টাফ আতাহার আলীসহ আরও একজন আঘাতপ্রাপ্ত হন।
স্থানীয়রা হুজাইফা মাসুদকে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার মাথায় গুরুতর জখম হওয়ায় ৬টি সেলাই দিতে হয়েছে।
এসএন