সেই অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে আদালতের স্বপ্রণোদিত মামলা
নাটোরের লালপুর উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসকের ভূমিকায় আলোচিত সেই অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত মামলা করেছেন আদালত। শনিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে নাটোরের সিংড়া আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ ওই মামলাটি করেন।
নাটোর জজকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মালেক শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো আদালতের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর বিচারক ঘটনার বিস্তারিত জানতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করেন। ওই প্রতিবেদনগুলো এবং অনুসন্ধানে প্রতীয়মান যে, নাটোরের লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে আমজাদ হোসেন গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কানে স্টেথোস্কোপ লাগিয়ে রোগী দেখছেন। যা বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইন লঙ্ঘনকারী ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামি আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি ধারায় মামলা গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুরও আদেশ দেন আদালত।
আগামী ১৯ অক্টোবর শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে। মামলায় ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) সুরুজ্জামান শামীমসহ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরএমও সুরুজ্জামান শামীম জানান, তিনি এ সংক্রান্ত কোনো আদেশ পাননি। পেলে আদেশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসকের ভূমিকায় অ্যাম্বুলেন্স চালকের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ছবিতে দেখা যায়, কানে স্টেথোস্কোপ লাগিয়ে রোগী দেখছেন আমজাদ হোসেন। তিনি ওই হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক। ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও সুরুজ্জামান শামীম বলেন, আমজাদ মাঝে মাঝে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালায়। যখন কাজ থাকে না তখন হাসপাতাল চত্বরে দালালি করে। স্থানীয় ও প্রভাবশালী হওয়ায় স্টাফদের সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে। তাই মাঝে মধ্যে নিজ স্বার্থেই কোনো রোগী আসলে আগ বাড়িয়ে তাদের সঙ্গে পরিচিত ও তাদের সমস্যা সমাধান করে রোগীর স্বজনদের থেকে কিছু আর্থিক সুবিধা নিতে চায়।
ওই ঘটনাটি এমনই হতে পারে দাবি করে তিনি জানান, ওই সময়ে তিনি রোগীর খোঁজ নিতে রাউন্ডে ছিলেন।
অভিযুক্ত আমজাদ এ বিষয়ে জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে পাশের মোমিনপুর এলাকায় সংঘর্ষে আহত এক রোগী আসে। ওই সময় স্টাফ ইয়াসমিন তাকে ওই রোগীর প্রেশার মাপতে বললে তিনি ওই কাজ করছিলেন। তখন কেউ জানালা দিয়ে গোপনে ওই ছবিটি তুলে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. একেএম শাহাবুদ্দিন বলেন, বাইরের কোনো লোক কোনোক্রমেই জরুরি বিভাগে এ ধরনের কাজ করতে পারে না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসজি