রাজশাহীতে আবারও সাংবাদিকের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ৪
রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার (রাজশাহী) তানজিমুল হকের উপর হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা।
রবিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর হড়গ্রাম পূর্বপাড়া এলাকায় অবস্থিত ‘বায়োহার্বস আয়ুর্বেদিক’ নামে একটি অবৈধ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মচারীরা তার উপর হামলা করে। এরপরে সেখানে অবস্থান নেয় রাজশাহীর স্থানীয় সাংবাদিকরা। এঘটনায় সাংবাদিক তানজিমুল হক পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১২-১৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার পরে সাংবাদিকদের দাবির মুখে নানা নাটকীয়তা শেষে দুপুরের পরে দু’দফায় অভিযান চালিয়ে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হলেন- হিমেল, তুষার, নাসির উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেন। এরা ওই অবৈধ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। তবে এ ঘটনার মূল হোতা দুরুল হুদা এখনো পলাতক রয়েছে।
সাংবাদিক তানজিমুল হক জানান, নগরীর হড়গ্রাম পূর্বপাড়া আবাসিক এলাকা হলেও সেখানে কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে ‘বায়োহার্বস আয়ুর্বেদিক’ নামে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা করে আসছে। প্রায়ই সরু রাস্তার পুরোটা দখলে নিয়ে মালামাল ওঠানামা করে প্রতিষ্ঠানটি। এতে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষ বিপাকে পড়েন। তাদের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়; যা নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ।
তিনি আরও জানান, রবিবার সকালে তিনি তার ছেলেকে স্কুলে দেওয়ার জন্য গাড়ি নিয়ে বের হয়েছিলেন। ওই কোম্পানির গাড়ি পুরো রাস্তা ঘিরে মালামাল ওঠানামা করছিল। তাদের এখানে মালামাল ওঠানামা না করে একটু দূরে মূল সড়কে গাড়ি রাখতে বলায় সাংবাদিকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করেন। প্রতিবাদ করলে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙে দেয়। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, ওই ঘটনায় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, হামলার পরপরই ওই অবৈধ কারখানায় অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের যৌথ টিম। এসময় নগরীর আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন যৌন উত্তেজক ওষুধ তৈরির দায়ে ওই প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ জানান, ওই প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন ওষুধ তৈরি করে আসছিল। সারোয়ার হোসেন নামে একজন ভূ-গোলে পড়া ছাত্র মান-নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করছিল। কারখানার পরিবেশও খারাপ ছিল। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি বৈধতার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি মালিক সাঈদ বিশ্বাস। একারণে জরিমানা করা হয়। এসময় বিপুল পরিমাণ অবৈধ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে।
এসএন