নওগাঁয় দুর্গা পূজা শুরু
আজ ষষ্ঠী। ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে শুরু হলো নওগাঁয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। দেবী দুর্গা এবার গজে চড়ে আসবেন ভক্তদের কাছে। ধূপ-ধুনুচি, পঞ্চপ্রদীপ, উলুধ্বনি আর ঢাকের তালে সায়ংকালে আসনে অধিষ্ঠিত হলেন দেবী দুর্গা। পূজার সময় বাঙালি মাত্রই আনন্দে ভাসেন। আর মণ্ডপ মন্দিরগুলো মুখরিত হয়ে উঠে ভক্তদের আরাধনায়।
শনিবার (১ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাকের শব্দে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাড়া-মহল্লায় একটা আলাদা আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। উৎসবটি শান্তিপূর্ণভাবে পালনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি।
এ বছর জেলার ১১টি উপজেলায় মোট ৮১৬টি মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলাভিত্তিক দুর্গা পূজা মণ্ডপের সংখ্যা হচ্ছে নওগাঁ সদর উপজেলায় ১১৯টি, রানীনগর উপজেলায় ৫২টি, আত্রাই উপজেলায় ৫১টি, মহাদেবপুর উপজেলায় ১৫৪টি, বদলগাছি উপজেলায় ১০৬টি, মান্দা উপজেলায় ১১৭টি, নিয়ামতপুর উপজেলায় ৬৪টি, পোরশা উপজেলায় ১৮টি, সাপাহার উপজেলায় ১৭টি, পত্নীতলা উপজেলায় ৮৬টি এবং ধামইরহাট উপজেলায় ৩২টি। সনাতন সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে এখন নওগাঁয় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দুর্গা পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে জেলাজুড়ে পূজা মণ্ডপগুলো বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে।
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গা সমস্ত অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীকরূপে পূজিত। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস।
পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী, কোনও মানুষ বা দেবতা কখনও মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলত অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করেন এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চান। কিন্তু দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধ করেন।
নওগাঁ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিভাস মজুমদার গোপাল ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, এ বছর ৮১৬টি মণ্ডপে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারদীয় দূর্গা উৎসব পালন করা হচ্ছে। বিগত দুই বছর করোনার কারণে সীমিত পরিসরে উৎসব হয়েছে। এ বছর বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালন করা হবে বিশ্বাস। তবে সরকারি কিছু বিধিনিষেধের কারণে নিরাপত্তার জন্য বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে যতটুকু আলোকসজ্জার প্রয়োজন করা হবে।
এ ব্যাপারে নওগাঁ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, এবারের দুর্গাপূজা ঘিরে তৎপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পূজার প্রথম দিন শনিবার (১ অক্টোবর) থেকে বিসর্জন বুধবার (৫ অক্টোবর) পর্যন্ত পাঁচ দিন জেলাজুড়ে থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরো জেলাকে ৫টি সেক্টরে এবং ১১টি সাব-সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি সেক্টর একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অথবা ১ জন সহকারী পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এবং প্রতিটি সাব-সেক্টর একজন ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়াও জেলার ১০৮টি বিট এলাকায় একজন বিট অফিসারের নেতৃত্বে ৫/৬ জন পুলিশ-র্যাবের সদস্য সার্বক্ষণিক টহলরত থাকবে। অপরদিকে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে যথারীতি পুলিশের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংখ্যক আনসার ভিডিপি সদস্যরা দায়িত্বরত রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আগামী ৫ অক্টোবর দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসব।