আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৩
বগুড়ার শেরপুরে পৌর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মর্তুজা কাওসার অভি (৩৮) হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের ৮ নেতাকর্মীর নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (৩০সেপ্টেম্বর) নিহত আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী খাদিজা আক্তার লিমা বাদী হয়ে এই হত্যা মামলা দায়ের করে। নিহত অভি পৌর এলাকার খন্দকার পাড়ার মৃত হোসাইন কাওসার ফুয়াদের ছেলে। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা অভির সঙ্গে ঠিকাদারি ও হাটের ইজারা ব্যবসা নিয়ে মামলায় অভিযুক্তদের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের রেশ ধরে বিগত ২৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সন্ধ্যায় অভি যখন মোটরসাইকেল মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মোজাহিদ গ্যারেজে যাওয়ার সময়, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হিমেল অভিকে ডেকে গ্যারেজের দক্ষিণ পাশের ফাঁকা বাগানে নিয়ে যায়।
এ সময় শরীফ নামের যুবক সাধারণ লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। এই সুযোগে আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা মামলার অন্য অভিযুক্তরা এসে অভির সঙ্গে বাগবিতন্ডতায় জড়িয়ে পড়ে। এসময় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে বাগানের ভেতর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় অভি।
পরে রাম দা, চাপাতি ও চায়নিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় অভিকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিকে মৃত ঘোষণা করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
অপরদিকে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিহত আওয়ামী লীগ নেতার লাশ শহরের বারোদুয়ারী খন্দকারপাড়ায় নিজ বাসায় আনা হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরে ওই রাতেই শেরপুর শহীদিয়া আলীয়া মাদরাসা মাঠে নিহতের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
মামলার বাদী খাদিজা আক্তার লিমা বলেন, আমার স্বামীর হত্যাকারীরা খুবই প্রভাবশালী। ঘটনার পর থেকেই তাদের নামে মামলা না করার জন্য নানাভাবে আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল। আমি সেসব বাধা উপেক্ষা করে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আমার স্বামীর হত্যাকারীরা যত বড়ই প্রভাবশালী হোক না কেন, আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। ন্যায়বিচার পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সহযোগিতার জন্য আকুল আবেদন।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকার বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মামলার এজাহার নামীয় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামীদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এএজেড