'উড়ো' চিঠি নিয়ে রাসিক ও রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে বিভ্রান্তি!
একটি 'উড়ো চিঠি'কে কেন্দ্রে করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এবং শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই উড়ো চিঠি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে পাঠানো হয়। মেয়র লিটন বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ না করার বিষয়টি চিঠিতে উদ্ধত্তের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে বোর্ড চেয়ারম্যানের দাবি তিনি মেয়রকে কোনো চিঠি দেন নি। চিঠিটি ভুয়া। আর এ চিঠির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মেয়রের দপ্তর বোর্ড চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাল্টা চিঠি দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বোর্ড চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের ওই উড়ো চিঠিতে লেখা হয়েছে, 'আপনার সঙ্গে আমাকে দেখা করার জন্য গেটে অপেক্ষা করতে হবে! আপনার কাছে সময় চাইতে হবে? বিষয়টি কল্পনা করা আমার জন্য দুরহ। আপনি জানেন কি আমার জা শ্বশুড়ি এমপি। আমার আওয়ামী পরিবারে জন্ম। ভবিষ্যতে আমিও এমপি বা মন্ত্রী হতে পারি। গাজীপুরের ও কাটাখালীর মেয়রের দিকে তাকান। বর্তমানে তাদের কি অবস্থা'?
গত ১৮ জুলাই ওই চিঠিটি মেয়রের দফতরে পৌঁছে। এরপর সিটি করপোরেশন থেকে চিঠিটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম ২৪ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠান।
এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ গত ২২ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে এ বিষয়ে ১০ দিনের মধ্যে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চান। শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। এর আগে গত ২৬ জুলাই তিনি একটি চিঠি দিয়ে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকেও ভুয়া চিঠির বিষয়টি অবহিত করেছেন।
চেয়ারম্যানের চিঠিতে বলা হয়, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের অনুরূপ (জাল/স্ক্যান) স্বাক্ষরে একটি আপত্তিকর পত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কোন স্মারক নম্বর ব্যবহার করা হয় নি। চিঠিটি উপশহর পোস্ট অফিস থেকে পোস্ট করা হয়েছে। যা মেয়রের দপ্তর থেকে বোর্ড চেয়ারম্যান জেনেছেন। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সমস্ত অফিসিয়াল চিঠি বোর্ড সংলগ্ন জি.পি.ও-৬০০০ থেকে পোস্ট করা হয়। চিঠিটিতে যে ধরণের প্যাড এবং ফরমেট ব্যবহার করা হয়েছে তা রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কোন দাপ্তরিক পত্রে ব্যবহার করা হয় না।
মেয়রের কাছে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরির জন্য কে বা কারা এই স্মারকবিহীন পত্রটি উপশহর পোস্ট অফিসে পোস্ট করেছে। বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড বিব্রত এবং তা তদন্তের দাবি রাখে। ওই চিঠির সঙ্গে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের কোনরূপ সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানানো হয়।
তবে এ বিষয়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, তিনি এ ধরনের কোনো চিঠি মেয়রকে দেয়নি। চিঠিটি কিভাবে গেল তা তিনি জানেন না। আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শোকজড নোটিশটিও তিনি হাতে পাইনি। পেলে জবাব দিবেন।
এএজেড