অগ্নিমূল্যের বাজারে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস
চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাটবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগ্নিমূল্যে নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতাদের। সেই সঙ্গে বেড়েছে সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম। অনেক ক্রেতা বাজারের ব্যাগ হাতে বাজার ঘুরে ঘুরে দেখছেন একটু কমের আশায়। করতে পারছেন না কাঙ্ক্ষিত বাজার। দুর্মূল্যের বাজারে ক্রেতারা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
তবে বাজারে বিভিন্ন সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দামের ঊর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে বিক্রেতারা জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। গত দুই-তিন দিনের ব্যবধানে বিভিন্ন সবজির দাম বাজার ভেদে বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। এতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সকালে পৌর এলাকার মডার্ন মার্কেট কাঁচাবাজার, তহাবাজার, বটতলাহাট, বারঘরিয়া কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে পটল প্রতি কেজি ৩৫ টাকা, বেগুন ৫৫ টাকা, জালি পিস প্রতি ৩৫ টাকা, দেশি করলা ৮৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঝিঙা ৫০ টাকা, কাঁচা কলা ৩৫ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিদেশি রসুন ১০০-১২০ টাকা, দেশি রসুন ৮০ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৪০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা, আদা ৭০ টাকা, জিরা ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারে। মাছের আড়তে প্রায় সব ধরনের মাছের দামও বাড়তি। মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, পরিবহনের ভাড়া বাড়ায় সব ধরনের মাছের কেজিতে অন্তত ৫০-৭০ টাকা বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যপণ্যের চড়া দামের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে অপেক্ষাকৃত স্বল্প মূল্যের প্রোটিনের উৎস ডিমও। ডিমের হালি ৪৪ টাকা। এ ছাড়া দেশি মুরগি ৪ দিনের ব্যবধানে ৩৫০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মডার্ন মার্কেটের সবজি বিক্রেতা হকিম আলী জানান, পণ্যবাহী ট্রাকের ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় সবজির বাজারে দাম বেড়েছে। আর পণ্যবাহী ট্রাকের ভাড়া বেড়েছে ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে। তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্যবাহী ট্রাকে সবজি বহনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে।
শামিম হোসেন নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, যশোর ও খুলনা থেকে ট্রাকে আগে বহন খরচ হতো ১২ হাজার টাকা, ভাড়া বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ হাজার টাকায় মালামাল আসছে।
ক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। চাহিদা অনুযায়ী সবজি ক্রয় করাও সম্ভব হচ্ছে না। তাদের অভিযোগ বাজারে মনিটরিং না থাকায় ব্যবসায়ীরা এ ধরনের সুযোগ নিচ্ছে।
ক্রেতা জামাল হাসেন বলেন, বাজারে সবজি সরবরাহ থাকলেও চড়া দাম রয়েছে, এতে করে ক্রেতাদেরকে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। এ মুহূর্তে বাজারে প্রশাসনের অভিযান চালানো প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
আরেক ক্রেতা তারেক রহমান বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, কিন্তু তেমন আয়ের উৎস বাড়েনি। এমন পরিস্থিতিতে সীমিত আয়ের মানুষের মাঝে ফুটে উঠেছে ভোগান্তির চিত্র।
এসজি/