তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে লাগামহীন রাজশাহীর নিত্যপণ্যের বাজার
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে রাজশাহীর বাজারে। প্রায় সকল পণ্যের দাম বেড়েছে। লাগামহীনভাবে বেড়েছে চাল, আটা, ডিম ও মাছ-মাংসের দাম।
সপ্তাহের ব্যবধানে রাজশাহীর বাজারের চিত্র পুরো পাল্টে গেছে। দেখা যায়, কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মাছ-মাংসের দাম। সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকা বয়লার মুরগির দাম কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে। হাফ সেঞ্চুরিতে ডিমের হালি। দাম বেড়ে খুচরা বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা দরে। এ ছাড়াও চালের বাজারে প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) ও শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার, মাস্টার পাড়া, উপশহর নিউ মার্কেট ও তেরখাদিয়া কাঁচা বাজার পর্যবেক্ষণে এমন চিত্র উঠে আসে।
স্বস্তি নেই রাজশাহীর কাঁচাবাজারেও। প্রতি কেজিতে সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বেগুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে। কেজি প্রতি ৫ টাকা বেড়ে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা দরে, করলা কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে, পেঁপে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে, ঢেঁড়স ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪৬ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ২৫ থেকে ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, পুঁইশাক শাক প্রতি কেজি ২০ টাকা দরে, লাল শাক ও সবুজ শাক প্রতি কেজি ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়াও কলমি শাক প্রতি আঁটি বিক্রি হয়েছে ১৫-২০ টাকা, কাঁচাকলা প্রতি হালি ২৫ টাকা দরে, লেবু প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১২ টাকা, দেশি শসা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও হাইব্রিড শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে, মুলা প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ১০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। দেশি রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা এবং ইন্ডিয়ান রসুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা দরে এবং প্রতি লিটার ১৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে খোলা ভোজ্যতেল।
মাস্টার পাড়া সবজি বাজারে এসে দাম কষাকষিতে ব্যস্ত নগরীর আহম্মেদপুর বড় মসজিদ এলাকার আনজুয়ারা। তিনি বলেন, পরিবারের ৫ জন সদস্যের দিনে প্রায় দেড় কেজি চাল লাগে। সাথে সবজি অথবা মাছ-মাংস। একজনের আয় দিয়ে পুরো সংসার চলে। বেগুন, পেঁয়াজ, পটল ও ডিমের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে সামনের দিনে না খেয়ে থাকতে হবে। মাছ-মাংস না থাকলেও ডিম দিয়ে এক বেলা চালিয়ে নেওয়া যেত। এখন ডিমের দামও বেড়েছে।
এদিকে মাংসের বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৬৭০ টাকা দরে, খাসির মাংস ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগি কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা দরে ও লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজি দরে এবং হাঁস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। এসবের পাশাপাশি সকল চাল ও ময়দায় ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে কেজিতে। মাছের দামও ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
কুমারপাড়ার বাসিন্দা অভিজিৎ বলেন, বাজারে এসে দাম শুনে কি বলব ভাষা হারিয়ে ফেলার মতো অবস্থা। এইভাবে সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে মানুষের জীবনযাপন অনেক কঠিন হয়ে পরবে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার মনিটরিং জোরদার করার কথা বলছেন ক্রেতারা।
এসআইএইচ