বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম এর দেওয়া সাক্ষাৎকারের পর নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাকে মেজর ডালিম বলে মন্তব্যের তীর ছুঁড়ে দিয়েছেন, এবার সেই মিনহাজুল আরেফিন সিদ্দিক নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।
সোমবার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার নিজের ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তার অবস্থান জানান।
এর আগে, রোববার (০৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে এক লাইভ টকশোতে কথা বলেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম (বীর উত্তম)। দুই ঘণ্টার সেই লাইভ টকশোর আয়োজক ও সঞ্চালক ছিলেন, প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। টকশোতে মেজর ডালিম ৫০ বছরের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত থাকার কারণে দীর্ঘদিন আড়ালে ছিলেন। মেজর ডালিমের এই সাক্ষাৎকারের পর বিষয়টি ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সর্বত্র আলোচনায় এই মেজর ডালিম ইস্যু।
মিনহাজুল আরেফিন সিদ্দিক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, রাতারাতি মেজর ডালিম হয়ে গেছি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আর এরপরই বট বাহিনী ঝাপাইয়া পড়েছে আমার প্রোফাইলে।’
এদিকে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) এই ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন। যদিও উপদেষ্টা মেজর ডালিম ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো প্রশ্নেরই উত্তর দেননি।
ইলিয়াসের সঙ্গে টকশোর শুরুতে মেজর ডালিম বলেন, দেশবাসীকে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ছাত্র-জনতাকে, যারা আংশিক বিজয় অর্জন করেছেন, তাদের লাল শুভেচ্ছা জানাই। বিপ্লব একটি সমাজ যেকোনো রাষ্ট্রে একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেই অর্থে তাদের বিজয় এখনও পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। তার জন্য আরও সময় প্রয়োজন।
২৪’এর গণঅভ্যুত্থানের নেপথ্যের নায়ক ছাত্র-জনতাকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রসারণবাদী-হিন্দুত্ববাদী ভারত যার কবজায় আমরা প্রায় চলে গিয়েছি। সেই অবস্থান থেকে সেই ৭১’এর মতো আরেকটা স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে। তা না হলে বিপ্লব ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
জাতীয় সঙ্গীত ইস্যুতে মেজর বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের না হয়ে কাজী নজরুল ইসলাম বা অন্যান্য স্বনামধন্য দেশীয় কবিদের গান হতে পারত। ভিনদেশী একজন কবির গানকে জাতীয় সঙ্গীত বানানোকে পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শরিফুল হক ডালিম যিনি মেজর ডালিম নামে অধিক পরিচিত, তিনি হলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। শেখ মুজিব নিহত হওয়ার পর মেজর ডালিম (পরবর্তীতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল) সেটি বাংলাদেশ বেতারে ঘোষণা দেন। ’৭৫ পরবর্তী গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার তাকে বিদেশে বিভিন্ন বাংলাদেশি দূতাবাসে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়।