টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার, খুশিতে মিষ্টি বিতরণ
ইউপি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. হাবিবুল্লাহ্।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. হাবিবুল্লাহ্কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে টাঙ্গাইলের ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
এর আগে ছাত্র জনতার অন্দোলনের সময় মারধরের ঘটনায় মধুপুর থানায় গত ২ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে আদালতের মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলহাজতে প্রেরণ করে মধুপুর থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার রাতে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের একটি দল ঘাটাইল থানা পুলিশের সহযোগীতা নিয়ে হাবিবুল্লাহর নিজ বাড়ি সাগরদিঘীর হাতিমারা গ্রামে অভিযান চালায়। এরপর ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে মধুপুর থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে, হাবিবুল্লাহ্ গ্রেপ্তার হওয়ায় তার নিজ এলাকা সাগরদিঘীতে গ্রেফতারের দিন শুক্রবার রাতে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে এলাকাবাসী।
ঘাটাইল কলেজমোড় এলাকায় প্রায় ২ শতাধিক লোকের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন উপজেলা শ্রমিক দলের আহবায়ক সুফী সিদ্দিকী। গারোবাজার এলাকায়ও মিষ্টি বিতরণ করা হয় বলে জানান রাজিবুল ইসলাম রিয়াজ নামে একজন।
স্থানীয়রা জানায়, চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্ শুধু সাগরদিঘীতে নয় পুরো ঘাটাইলে একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। বিভিন্ন সময় অসংযত আচরণের জন্য তিনি সমালোচিত হয়েছেন। বন কর্মকর্তাকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হুমকি এবং সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভ করতে দেখা যায় তাকে।
অপরদিকে, চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি সাগরদিঘী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নং ওয়ার্ডের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর লেবাস পাল্টিয়ে জামায়াত ইসলামীর একটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় তাকে।
এ বিষয়ে উপজেলার জামায়াত ইসলামের আমীর মো. রাসেল মিয়া বলেন, হাবিবুল্লাহ্ তাদের দলের কেউ নন। জামায়াত ইসলামের সঙ্গে হাবিবুল্লাহ’র কোনো সম্পৃক্তা নেই।
ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের একটি দল চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ্কে গ্রেফতার করতে ঘাটাইল থানা পুলিশের সহযোগীতা চায়। থানা পুলিশের সহযোগীতায় গত শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে মধুপুরের একটি মামলায় আদালতের মাধ্যমে জেলে প্রেরণ হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দের অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে ঐ সংবাদ মাধ্যমের ঘাটাইল উপজেলা প্রতিনিধি ও ঘাটাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুম মিয়াকে হুমকি দেন তিনি। এ নিয়ে ঘাটাইল থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেন ভোক্তভোগী সাংবাদিক।