নরসিংদীতে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুইজন নিহত, আহত ১০
ছবি: সংগৃহীত
নরসিংদীর রায়পুরার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে নজরপুর এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জব্বার।
নিহতরা হলেন চান্দেরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সদস্য মানিক মিয়া (৫৫) এবং সাবেক নারী ইউপি সদস্য কল্পনা বেগম (৩২)। নিহত দুইজন সম্পর্কে ভাই-বোন এবং তারা উপজেলা যুবলীগ নেতা আবিদ হাসান রুবেলের অনুসারী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার এবং পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল যুবলীগ নেতা আবিদ হাসান রুবেল ও রায়পুরা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হারুন-অর-রশিদের মধ্যে। উভয় পক্ষের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে একে অপরের ওপর হামলার ঘটনা নতুন কিছু নয়। শনিবার ভোরে দুইপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা ধীরে ধীরে রক্তক্ষয়ী রূপ নেয়।
সংঘর্ষের সময় যুবলীগ নেতা রুবেলের চাচা মানিক মিয়া নিরাপত্তার জন্য চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের মেম্বার বশির উদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। তবে সেখানে হারুন-অর-রশিদের সমর্থকরা তাকে ঘিরে ফেলে এবং নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। অপরদিকে, একই ইউনিয়নের ভিন্ন একটি স্থানে কল্পনা বেগমকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহত মানিক মিয়া চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য ছিলেন। কল্পনা বেগম ওই ইউনিয়নের সাবেক নারী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল জব্বার জানান, “দীর্ঘদিনের গোষ্ঠীগত বিরোধের জেরে এ সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুইজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তবে সংঘর্ষস্থলে পুলিশ এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি।”
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় তাদের নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে উত্তেজনা বিরাজ করছে, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুই পক্ষের এই দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের, যা একাধিকবার প্রাণহানির ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এ ধরনের সহিংসতা ভবিষ্যতেও চলতে পারে।
এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।