বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ফেনী, মানুষের দুর্ভোগ চরমে
ছবি: সংগৃহীত
ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ফেনী সদর, পরশুরাম, ফুলগাজী, দাগনভূঞা ও ছাগলনাইয়া উপজেলা। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন স্থান দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে একের পর এক জনপদ ডুবে যাচ্ছে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জেলার সাড়ে তিন লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে তারা।
বুধবার (২২ আগস্ট) রাতে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে মূহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি। রাস্তা-ঘাট থেকে ঘরবাড়ি কিছুই রেহাই পায়নি বানের জলে। গলাপানিতে ডুবে দিশেহারা তিন উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ। এলাকায় দুদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় যোগাযোগ করতে পারছেন না বাইরে থাকা স্বজনরা।
গত মঙ্গলবার একজন নিখোঁজের খবর আসে। কিন্তু দুদিন পার হয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিচয়ও জানা যায়নি।
ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পরশুরামের মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌরশহরসহ ৪৫টির বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ছাগলনাইয়ার পাঠান নগর, রাধানগর, শুভপুর ইউনিয়নেরও বেশ কয়েকটি গ্রামে সৃষ্টি হয়েছে বন্যার।
জেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামীম ফরহাদ বলেন, প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাই পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকবে।
ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, ভারতীয় পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষণের মুহুরী-কহুয়া-সিলোনীয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২৭টি ভাঙা অংশ দিয়ে হুহু করে পানি ঢুকছে লোকালয়ে।
গেল মাসের শুরুতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর ১৫ স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। সেসব স্থানে জোড়াতালির মেরামতের পর চলতি মাসের শুরুতে বাঁধের আরও ১২ স্থানে ভেঙে যায়, প্লাবিত হয় ১০০টির বেশি গ্রাম। অবকাঠামো, ধান, ফসল ও মাছের ক্ষতি ছাড়িয়ে যায় ৩০ কোটির বেশি। ১৫ দিনের মাথায় আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে।