নওগাঁয় শীতে বেড়েছে শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকোপ
নওগাঁয় বেড়েছে শীত। সেই সঙ্গে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত নানা ধরনের রোগ। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নবজাতক ও শিশুরা। অন্য দিকে বয়স্ক মানুষও একই রকম ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
রোগগুলোর মধ্যে কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর। ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যায় শিশুরা বেশি। বয়স্কদেরও ডায়রিয়া হচ্ছে।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালের বেডে জায়গা না হওয়ায় শিশু ওয়ার্ডের মেঝেতেও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। হঠাৎ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রয়োজনের তুলনায় ওষুধপত্রের সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলার মান্দা উপজেলার মান্দা ফকির পাড়া গ্রামের মমতাজ বলেন, ‘তিনদিন আগে সন্তানের হঠাৎ করে পাতলা পায়খানা শুরু হয়। স্যালাইন খাওয়ানোর পরও কোনো কাজ হয়নি। অবশেষে হাসপাতালে এসেছি।’
সদর উপজেলার চকমুক্তার গ্রামের নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘গত কয়েক দিনের শীতে মেয়েটা বমি ও পাতলা পায়খানা দেখা দেয়। শুক্রবার রাতে হাসপাতালে নিয়ে আসি। শিশু ওয়ার্ডে রোগীর এতটাই চাপ যে, জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছি।’
নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মনিরা জান্নাত ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় শিশু ওয়ার্ডের বেডে জায়গা হচ্ছে না। তাই মেঝেতে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এক বেডে ২-৩ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে কষ্ট পাচ্ছে অভিভাবক এবং শিশুরা। চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো আমরাও হাঁপিয়ে উঠেছি।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ফারহানা আখতার ফারুক ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘হাসপাতালে অন্য রোগীর তুলনায় শিশু আর বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন ডায়রিয়া এবং ১৫ জন নিউমোনিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছে। এই অবস্থায় চিকিৎসক আর নার্সরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন রোগীদের সেবা দেওয়ার।কলেরা স্যালাইনসহ বিভিন্ন এন্টিবায়োটিক ওষুধ সরকার থেকে সাপ্লাই থাকার কারণে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে পারছি।’
শিশুদের বাইরের অনিরাপদ খাবার না খেতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বলেছেন এই আবহাওয়ায় শিশুদের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। শিশুদের যেন ঠাণ্ডা না লাগে সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
নওগাঁ সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মঞ্জুর-এ-মোর্শেদ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘গত পাঁচ দিনে জেলার ১১ উপজেলায় প্রায় চার শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু ও বয়স্ক। শীত থেকে রক্ষা পেতে গরম খাবার ও গরম পোশাক পরিধান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বাচ্চারা অসুস্থ হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।’
/এএন