তারাকান্দা-শ্যামগঞ্জ সড়ক ভাঙাচোরা, চলাচলে ভোগান্তি
ময়মনসিংহের তারাকান্দা–শ্যামগঞ্জ সড়কের তারাকান্দা অংশে প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে বেশিরভাগ ভাঙাচোরা। এ সড়কের পিচ ও খোয়া উঠে গিয়ে সৃষ্ট ছোটবড় গর্তে সড়কটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কটিতে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছে যানবাহন ও পথচারী। যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, তারাকান্দা উপজেলার রামপুর, গালাগাঁও, কামারিয়া ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রামের এবং পূর্বধলা ও গৌরীপুর উপজেলার ১০টি গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন। দুই উপজেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী সড়কও এটি। যাতায়াতের বিকল্প কোনো পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে এ সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয় স্থানীয়দের। এমনকি নানা সময়ে রোগী নিয়েও এ সড়ক দিয়েই আসা-যাওয়া করতে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের সমস্যা হয় বেশি।
তারাকান্দা বাজারের ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন হাটের ব্যবসায়ীরা পণ্য আনা-নেওয়া করে থাকে। কিন্তু সড়কটির বেহাল দশার কারণে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি যানবাহন চালকদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।’
অটোচালক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ সড়কে অটো চালাতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। কেননা এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত। এসব গর্তের কাছে গেলে মনে হয় কখন যেন অটোটি উল্টে যায়।’
ভ্যানচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ সড়কে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। এখন সড়কের যে অবস্থা হয়েছে তাতে ভ্যান চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এ পথটিতে চলতে ভয় হয়।’
ওই সড়কের পাশে ভাট্টা মিলন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত। বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক মো. দুলাল মিয়া বলেন, ‘দীর্ঘ দিন হলো রাস্তাটির উন্নয়ন হয়নি। খারাপ রাস্তার কারণে যানবাহনের ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। যাতায়াতে অতিরিক্ত সময়ও নষ্ট হচ্ছে, কষ্টও দিন দিন বাড়ছে। ফলে অনেক সময় শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হতে পারে না এ সড়কের পাশে থাকা বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।’
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রফিক, শহিদ, শফিক, নিলুফা জানায়, গাড়িতে উঠে তারা ভয়ে থাকে কখন গাড়ি উল্টে যায়। এভাবে পথ চলতে সময় ও কষ্ট দুটোই বেশি লাগে।
রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মদন চন্দ্র সিংহ বলেন, ‘তারাকান্দা বাসস্ট্যান্ড থেকে বাহেলা পর্যন্ত সড়কের পিচ, ঢালাই উঠে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পথ চলতে প্রতিদিন কেউ না কেউ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। সড়কটি মেরামতের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলেছি।’
তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক বলেন, ‘এ সড়কে চলতে গিয়ে অনেকেই যন্ত্রণায় পড়েন বলে জানিয়েছেন। সড়কটির মেরামতের ব্যাপারে আগামী সমন্বয় কমিটির সভায় প্রস্তাব উত্থাপন করব।
তারাকান্দা উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শেরেকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙা সড়কটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সংস্কার করা হবে।’
একে/এএন