হিমাগারের অব্যবস্থাপনায় ১০ কোটি টাকার আলুতে পচন
রাজশাহীর পবা উপজেলার মদনহাটি এলাকায় ‘আমান কোল্ড স্টোরে’ কৃষকের প্রায় ১০ কোটি টাকার আলুতে পচন ধরেছে। পচা আলু স্টোর থেকে বের করে বাইরে ফেলে দিচ্ছে স্টোর কর্তৃপক্ষ।
এ নিয়ে বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে শতাধিক কৃষক ও আলু চাষি স্টোরের সামনে অবস্থান নেন।
আলু চাষি ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, স্টোরের গ্যাস মেশিন খারাপ থাকার পরেও লাখ লাখ বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। ফলে স্বল্প গ্যাসের কারণে আলুগুলো পচে গেছে। প্রায় নব্বই ভাগ আলু পচে গেছে। যেগুলো পচতে বাকি আছে, সেগুলোও বাজারমূল্য পাওয়া যাবে না।
হিমাগার কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, এ হিমাগারে ১ লাখ ৬৬ হাজার বস্তা আলু আছে। প্রতিটি বস্তায় আলুর পরিমাণ ৫০ কেজি। বর্তমানে ৫০ কেজি আলুর বস্তার দাম ৬০০ টাকা। সব আলু পচে গেলে ক্ষতির পরিমাণ ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাঁড়াবে।
চাষিদের দাবি, সব আলুই পচে গেছে। বস্তায় একটা আলু পচে যাওয়া মানেই সব আলু নষ্ট হওয়া। এগুলো আর খাওয়ার উপযোগী নয়। তীব্র গরমে দুর্বল মেশিন ঠিকমতো গুদাম ঠান্ডা রাখতে পারেনি। ফলে আলু পচে গন্ধ বের হচ্ছে। ফলে এগুলো আর বাজারে বিক্রির উপযোগী নয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গুদাম ঘর থেকে আলুর বস্তা বের করে স্টোরেজের ভেতরেই বাতাস দেওয়া হচ্ছে। তখনই কৃষকরা আলু পচে যাওয়ার কথা জানতে পারেন। এরপর ক্ষতিপূরণের দাবিতে কৃষকেরা হিমাগারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে হিমাগার কর্তৃপক্ষ আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এরপর কৃষকেরা শান্ত হন।
আলু ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বলেন, আমি ৭ হাজার বস্তা আলু রেখেছিলাম। এখন জানতে পারছি সব আলু পচে গেছে। ক্ষতিপূরণ না দিলে আমি পথে বসে যাব। মার্চ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত হিমাগারে আলু রাখেন কৃষকেরা। এ জন্য বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। আলুর বস্তা বের করার সময় টাকা দিতে হয়।
রানা সর্দার নামে এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, গত বছর আমি এ কোল্ড স্টোরেজে আলু রেখেছিলাম। বিক্রি করার পর ক্রেতারা অভিযোগ করেন যে আলুর মান ভালো নয়। নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এবার সব আলু অন্য হিমাগারে রেখেছেন। শুধু একটা ট্রলি ভুল করে আমানে ঢুকে পড়েছিল বলে সে ট্রলির ৫৭ বস্তা আলু এখানে রাখা হয়েছিল। এগুলো সব পচে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিমাগারের ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, আলু নানা কারণেই পচতে পারে। আলুর মান খারাপ হলেও পচে যায়। কেন পচেছে তা জানি না। কী পরিমাণ পচেছে সে হিসাবও করা হয়নি। আমার মালিক ১০ দিনের সময় নিয়েছেন। এটা একদিনের ব্যবসা না। কীভাবে কী করা যায় তা দেখছি।
এসএন