পলাশবাড়ীতে বাঁশের সাঁকোই ১০ গ্রামের মানুষের ভরসা
বাঁশ দিয়ে নির্মিত একটি সাঁকোই গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন চলাচলে একমাত্র ভরসা। একটি ব্রিজের অভাবে যুগের পর যুগ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
ওই ইউনিয়নের জাফর গ্রামে আখিরা নদীর আমবাগান ঘাটে সাঁকোটির অবস্থান। স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার ও চিকিৎসাসহ দৈনন্দিন অতি জরুরি প্রয়োজনে এ সাঁকোর ওপর দিয়েই সীমানাবর্তী দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায় যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের।
তাদের দাবি, আমবাগান ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মিত হলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাগবের পাশাপাশি অর্থনীতিতে আসবে গতি।
সরেজমিনে আমবাগান ঘাট ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় জাফর, মুংলিশপুর, পালপাড়া, শীলপাড়া, গনকপাড়া, হাসানখোর, রামচন্দ্রপুর, জাইতরসহ অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ নিয়মিত চলাচল করছে বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। তারা ঘোড়াঘাট শাহ ইসমাইল গাজী উচ্চ বিদ্যালয়, ঘোড়াঘাট মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ঘোড়াঘাট কেসি পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঘোড়ঘাট রাজিয়া সুলতানা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও নূরজাহানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে।
জানতে চাইলে জাফর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মজিদ প্রামানিক বলেন, আমবাগান ঘাট থেকে পাশের ঘোড়াঘাট উপজেলা মাত্র এক কিলোমিটার দূরে। অপরদিকে, আমাদের নিজ উপজেলা পলাশবাড়ীর দুরত্ব অন্ততঃ ১৩ কিলোমিটার। সে কারণে লেখাপড়া-হাটবাজারসহ নানা জরুরি প্রয়োজনে পলাশবাড়ীর পরিবর্তে ঘোড়াঘাটে যেতে হয় দুর্ভোগের শিকার মানুষগুলোর।
তিনি আরো বলেন, বর্ষা এলে মানুষের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকটা পথ নৌকায় পাড়ি দিতে হয়। এতে অথৈ নদীতে নৌকা ডুবির আশঙ্কার পাশাপাশি অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সঠিক সময় ও নির্বিঘ্নে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারে না।
জাফর গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ ও ছাত্তার মিয়া জানান, আমাদের অনেকেরেই বাড়ি নদীর এপারে। কিন্তু জমি নদীর ওপারে। ব্রিজ না থাকায় জমি থেকে ফসল ঘরে তুলতে বেশ বেগ পেতে হয়। আমাদের উৎপাদিত পণ্য চাইলেই হাটে-বাজারে নিতে পারি না। সাঁকোর উপর দিয়েই বাইসাইকেল, মোটরসাইকেলসহ রিকশাভ্যানে কৃষিপণ্য পরিবহন করতে হয়। এতে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান অবু বক্কর সিদ্দিক জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমবাগান ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। এটি নির্মিত হলে এলাকার ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াসহ ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে।
এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান নয়ন জানান, জনদুর্ভোগ লাঘবে আমবাগান ঘাটে ব্রিজ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএসপি