দুর্বৃত্তের বিষে মাছের খামারের স্বপ্ন শেষ তুষারের!
নেত্রকোনার পূর্বধলায় আশরাফুল কবির তুষারের একটি মাছের খামারে বিষ দিয়ে বিপুল পরিমাণ মাছ নিধন করেছে দুর্বৃত্তরা। খামারে মাছের পাশাপাশি নানা জলজ প্রাণীও মরে ভেসে উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ফিশারির মালিক প্রতিবেশী শহীদ মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জেলার পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। তিনি লিখিত অভিযোগ ও পেয়েছেন বলে জানান।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামে পাঁচ একর জমিতে 'রোকেয়া ফিশারিজ' নামে একটি ফিশারিজ দেন স্থানীয় আশরাফুল কবির তুষার। এতে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ অনেক ধরনের দেশিয় প্রজাতির মাছ চাষ করেন তিনি। পোনা মাছ ছাড়া থেকে শুরু করে এসবের খাবার ও শ্রমিকের ব্যয়সহ ৩০ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। বর্তমানে এই ফিশারির একেকটি মাছ ৫ কেজি থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত ওজনের হয়েছে। মাছগুলো তুলে বিক্রি করার মতো উপযোগী হয়েছে। এতে কোটি টাকার মাছ বিক্রি করা যেত।
দুর্বৃত্তরা একসময় ফিশারিতে বিষ দিয়েছে বলে ধারণা করছেন তুষার। নিজের পরিশ্রম ও সবটুকু সঞ্চয়ে গড়া ফিশারির বড় বড় মাছ চোখের সামনে মরে ভাসতে দেখে হতবাক হয়ে পড়েছেন তিনি। পুরনো শত্রুতার জেরে প্রতিবেশী শহীদ মিয়া এ কাজ করেছে বলে ধারণা তার। ফিশারির পাশে শহীদের মুদির দোকান রয়েছে। এ ঘটনায় ফিশারির মালিক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
ব্যবসায়ী আজাদ বলেন, তুষায় তার জীবনের সবটুকু সঞ্চয় ব্যয় করে এই ফিশারিটা গড়ে তুলেছেন। এতে এলাকার অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অনেক মানুষ আছে কোনো কাজ করতে চায় না। তুষারের এই ভালো উদ্যোগটা হয়তো তাদের ভালো লাগেনি। এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
মৎস্য চাষি আশরাফুল কবির তুষার বলেন, মাছগুলো বড় হয়েছে, বিক্রির উপযোগী হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে তুলে বিক্রি করবো ভাবছিলাম। বড় রুই-কাতলাগুলো কোনোটা ৫ কেজি, কোনোটা আট কেজি পর্যন্ত হয়েছে। দেশী মাছগুলোও ভালো বড় হয়েছে। কিন্তু রোববার সকালে দেখি ফিশারির মাছ মরে ভাসতে শুরু করে। আজ সোমবার হাজার হাজার মাছ মরে ভেসে উঠছে।
তিনি আরও বলেন,প্রতিবেশী শহীদ মিয়ার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সেই আমার ফিশারিতে বিষ দিয়েছে বলে ধারণা করছি। এ কাজ তারই হবে। এ ফিশারিতে ৩০ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। এতে কোটি টাকার মাছ বিক্রি করা যেত। চোখের সামনে তিলে তিলে গড়া স্বপ্ন শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিছুই করার নেই শুধু বসে বসে দেখছি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযুক্ত শহীদ মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে এ ঘটনায় এলাকায় একটি সালিশ হয়েছে। সালিশে স্থানীয়রা আমাকে অভিযুক্ত করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। অযথা আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।
পুর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি )সাইফুল ইসলাম বলেন, সত্যি বিষয়টি নিন্দনীয়। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এএজেড