প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর চার লাখ টাকায় বিক্রি!
শেরপুরের নকলায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দুর্যোগ সহনীয় ঘর সাব কবলায় বিক্রি করে দিয়েছেন এক সুবিধাভোগী। জমিসহ ওই ঘরটি ৪লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন তিনি। এ ঘটনা জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি এলাকাজুড়ে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জমি আছে ঘর নেই প্রকল্পে সরকার ঘরে দিতে নির্দেশ দেন। পরে টি,আর-কাবিটা কর্মসূটির আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে জমি আছে ঘর নাই প্রকল্পের আওতায় ২লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয়ে সরকারি ঘরের বরাদ্দ শুরু হয়। ওই প্রকল্পের অধীনে একটি সরকারি ঘর পান নকলা উপজেলার বানেশ্বর্দী ইউনিয়নের হতদরিদ্র হাতেম আলী। সেই ঘরে পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি মারা যান।
পরে তার ছোট ছেলে রিক্সাচালক শহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগমকে নিয়ে ওই সরকারি ঘরে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু তিন বছরের ব্যবধানে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১২ তারিখে ওই জমিসহ সাব কবলায় সরকারি ঘরটি ৪লাখ টাকায় বিক্রি করেন একই এলাকার মৃত সুলতান মিয়ার স্ত্রী হাসনা বেগম ওরফে বিউটির কাছে। এ ঘটনা জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে।
কিভাবে সরকারি ঘর বিক্রি করলেন শহিদুল ইসলাম। এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে, তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম বলেন, জমি ও ঘরটা ৪লাখ টাকায় বিক্রি করছি। ৩লাখ ৩০হাজার টাকা হাতে পেয়েছি। আসলে আমরা না জেনেই ঘরটি বিক্রি করে দিছিলাম, এটা অন্যায় হয়েছে। এখন আমরা টাকা ফিরিয়ে দিয়ে আমাদের জায়গা ও ঘর আমরাই রাখবো। এ বিষয়ে জমিসহ ঘর কেনা হাসনা বেগম ওরফে বিউটির সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মালিক জায়গা বিক্রি করছে, তাই আমি কিনেছি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. শামিম মিয়া বলেন, সরকারি ঘরটি পাইয়ে দিতে আমি সব ধরণের সহযোগিতা করেছি। একবার শুনলাম তার ছেলে জায়গা ও ঘরটি বিক্রি করবে, যখন এমন খবর জানলাম পরে আমি না করলাম, কিন্তু কে শোনে কার কথা, গোপনে গোপনে জমি ও ঘর বিক্রি করে দিছে। এটাতো শুধু অন্যায় না বরং সরকারের বদনাম।
পাশেই থাকা কৃষক আ: সালাম মিয়া বলেন, গরীব মানুষ করে সরহার (সরকার) এডা (একটা) ঘর দিলো, এহন (এখন) হুনতেছি (শুনতেছি) ঘরডা বেইচ্ছি (বেঁচে) ফেলেছে। খুব খারাপ কাজ করছে, লোভ করলেই কি ঘর বেইচ্ছি ফেলানি (ফেলে) নাগবো (লাগবো)।
নকলার ৫নং বানেশ্বর্দী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মনির হোসেন জানান, আমাকে যখন বললো ঘর বিক্রির বিষয়ে আমি না করেছি দুই পক্ষকেই। পরে আর আমার সাথে কেউ কোন যোগাযোগ করেনি। আজকে শুনলাম গোপনে গোপনে জমি ও সরকারি ঘর বিক্রি করে দিছে। আসলে এটি অন্যায় হয়েছে। তার জায়গা এটা ঠিক আছে, কিন্তু সরকারি ঘর বিক্রি কোনভাবেই ঠিক হয়নি, এটি জঘন্য কাজ হয়েছে।
এ ঘটনায় নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার অফিসার মো. বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘এই তথ্যটি আগে জানতাম না, আপনার মাধ্যমে জানলাম। যদি এমন কেউ করে থাকে তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এএজেড