শেরপুর সীমান্তে বন্য হাতির পর বাঘ আতঙ্কে স্থানীয়রা
শেরপুর সীমান্তে প্রায় সময়ই বন্য হাতির আক্রমণ থাকলেও এবার নতুন করে বাঘ আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে এক শিশুকে আহতসহ ও কৃষকের ১৮টি ছাগল খেয়ে ফেলেছে বাঘ দাবি করেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানান, ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া রেঞ্জের গজনী বিটের বাকাকুড়া নয়াপাড়া, উত্তর গান্ধিগাঁও, হালচাটি ও ছোট গজনী এলাকায় বন্য হাতির প্রায় সময় বিচরণ থাকলেও গত এক সপ্তাহের মধ্যে এক শিশুকে আহত করাসহ কৃষকের ১৮টি ছাগল খোয়া গেছে। এতে আহত ও ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে একটি ছাগল, একটি ভেড়া ও একটি গরুকে।
স্থানীয় বাসিন্দা আক্কাছ আলী বলেন, বাঘ ছাড়া এভাবে ছাগল খোয়া যায় না। গত কয়েকদিন ধরে ছাগল খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম ও আবু তালেব জানান, যখন ছাগল ও ভেড়া হারানো শুরু হয়েছে তখন থেকেই আমরা পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজা শুরু করি। পরে পাহাড়ের এক টিলায় ছাগলের কয়েকটি নাড়িভূঁড়ি পড়ে থাকতে দেখি। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বাঘ ছাগলগুলোকে খেয়েছে। এজন্য আমরা আতঙ্কে আছি।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সীমান্তের গ্রামের কৃষকরা তাদের পালিত গরু-ছাগল সকালে পাহাড়ে ছেড়ে দেয় ঘাস খাওয়ার জন্য। সারাদিন ঘাস খেয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ছাগল আর বাড়ি ফিরে না। পরে কয়েকজন কৃষক পাহাড়ের এক টিলায় ছাগলের কয়েকটি নাড়িভূঁড়ি পড়ে থাকতে দেখেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, বাকাকুড়া গ্রামের সাগরের দুটি ছাগল, আমিনুলের একটি ছাগল, গান্ধিগাঁও গ্রামের আলমের একটি ছাগল, ঠান্ডু পাগলার একটি ছাগল, আক্তারের একটি ছাগলসহ ১৮ জন কৃষকের ১৮টিছাগল খোয়া গেছে।
এছাড়া গান্ধিগাঁও গ্রামের মঞ্জু মিয়ার একটি গরু ও সবুজ মিয়ার একটি ভেড়া আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। অপরদিকে, উত্তর বাকাকুড়া গ্রামের গুজা ওরফে গজেন্দ্র মারাকের আট বছর বয়সী ছেলেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনার পর সীমান্তের ওই গ্রামগুলোতে বাঘ আতংক বিরাজ করছে।
বাকাকুড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য মোসা সর্দার বলেন, বন্য হাতির তান্ডবের পর এলাকাবাসী এখন বাঘ আতংকে আছে। যদিও আমি নিজ চোখে দেখিনি, তবে যেভাবে স্থানীয়রা বলছেন বা পাহাড় থেকে নাড়িভূঁড়ি উদ্ধার করেছেন এতে বাঘ ছাড়া কিছু নয়।
রাংটিয়া রেঞ্জের গজনী বিট কর্মকর্তা মো. মকরুল ইসলাম আকন্দ বলেন, আমিও বিষয়টি শুনেছি, শোনার পর এ বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদেরও নিরাপদে থাকতে বলেছি, প্রয়োজনে পুরো এলাকায় মাইকিং করা হবে।
শেরপুরের সহকারি বন সংরক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, সীমান্তে যে বাঘের কথাটি শুনা যাচ্ছে এটা আসলে কতটা সত্যি আমার জানা নেই। এলাকাবাসীর কথাতে বাঘটি নাকি ছোট, যদি ছোট হয়ে থাকে তাহলে গবাদি পশু কিভায়ে খায়৷ তারপরও আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর করছি, আগামীকাল এলাকায় মাইকিং করা হবে।
এএজেড