ছাত্রকে শাসন করায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রের মামলা!
ময়মনসিংহ নগরীর রয়েল মিডিয়া কলেজে ছাত্রের নিকট পাঠ্য বই না থাকার কারণ জানতে চাই শিক্ষক এতে ছাত্র অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। ফলে শিক্ষক রাগান্বিত হয়ে ছাত্রকে বেত্রাঘাত করেন। এতে ওই ছাত্র ক্ষিপ্ত হয়ে থানায় গিয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার এক সপ্তাহ পর আজ (৮ আগস্ট) বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন অত্র কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মু. ইমরুল হাসান সিদ্দিকী (৪৮)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট সকালে একাদশ শ্রেণির বাংলা ক্লাস চলাকালীন। বাংলা শিক্ষক মু. ইমরুল হাসান সিদ্দিকী কে কে বাংলা ব্যাকরণ বই আনেনি জানতে চাইলে আসিফ ইকবাল শাওন নামের ওই ছাত্র বেঞ্চে বসেই হৈ-হুল্লোড় শুরু করে।তখন কোনোভাবেই তাকে থামানো যাচ্ছিল না।
এ অবস্থায় শিক্ষক ইমরুল হাসান একটি বেত এনে তার কাছে গিয়ে ভয় দেখানোরর চেষ্টা করে এতে ওই ছাত্র বাজে মন্তব্য করতে থাকে। তখন শিক্ষক রেগে গিয়ে ওই ছাত্রের গায়ে কয়েকটি বেতাঘাত করেন। ওই সময় ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করে চলে যায় শাওন। পরে থানায় গিয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে।
এদিকে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে যেতে পারে ভেবে অভিযুক্ত শিক্ষক ইমরুল হাসান ওই ছাত্র ও তার মা-বাবার কাছে গিয়ে ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সে সময় ছাত্রের বাবা মো. জসিম উদ্দিন শিক্ষককে আশ্বস্ত করলেও ঘটনার এক সপ্তাহ পর আজ বৃহস্পতিবার অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
এ ব্যাপারে ছাত্র আসিফ জানায়, কলেজে সেই শিক্ষকের লেখা একটি ব্যাকরণ বই পাঠ্য হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী বইটি না কিনলে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। সেই সাথে ক্লাসে এসে মা-বাবাসহ গালাগাল করেন তিনি।
এ অবস্থায় গত ৩১ আগস্ট ক্লাস চলাকালে শিক্ষক জানতে চান কে কে বই আনেনি। যাদের বই নেই তাদের গালাগালি করে শ্রেণিকক্ষে দাঁড় করিয়ে রাখে।একসময় সবাইকে বসিয়ে দিলেও আমাকে বেত দিয়ে ১৫ থেকে ২০টি আঘাত করা হয়। এতে বাধ্য হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে সে।
শিক্ষক ইমরুল হাসান জানান, বই পাঠ্য করেছে কর্তৃপক্ষ। সেই বই যদি কেউ না নিয়ে আসে তবে তার কাছে জবাব চাওয়া যেতেই পারে।
এ ব্যাপারে উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ স্নেহাশীষ চন্দ্র দে জানান, এটা অত্যন্ত দঃখজনক ঘটনা। এ রকম ঘটনা আমার জীবনে শুনিনি। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক শুধু বলেছিলেন কেন বই আনা হয়নি। এতে ছাত্র বেয়াদবি করেছিল।
একজন ছাত্রকে শিক্ষক শাসন করতেই পারেন। এ জন্য ঘটনা মামলা পর্যন্ত যাবে তা ভাবতেও অবাক লাগে। এতে তৃতীয় কারো ইন্ধন থাকতে পারে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আনোয়ার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার পরপরই বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু করেছেন।
এএজেড