পূর্বধলায় বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব, জনমনে আতঙ্ক
নেত্রকোনার পূর্বধলায় বেড়ে গেছে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দল বেঁধে চলাচল করছে এসব কুকুর। এদের আক্রমণে মানুষসহ বিভিন্ন পশু ও প্রাণী আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়াও কিছু কুকুর শরীরে ক্ষত ও পচনসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আক্রান্ত এসব কুকুরের শরীর থেকে ছড়াচ্ছে নানা রকমের রোগ জীবাণু এবং দুর্গন্ধ। জনমনে পথ চলতে সবসময় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এসব অসুস্থ কুকুরের বিচরণে এলাকায় মানুষের চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়েছে। কুকুরের আতঙ্কে অসহায় সাধারণ মানুষ। পথচারী ও স্কুল শিক্ষার্থীরা এখন কুকুর আতঙ্কে ভুগছে। বেওয়ারিশ এসব কুকুর নিয়ন্ত্রণে কোনও সরকারি বা এলাকাভিত্তিক উদ্যোগ নেই । ফলে দিনকে দিন বেড়েই চলছে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা।
সরেজমিনে দেখা যায, পূর্বধলা স্টেশন বাজার, উপজেলা পরিষদ ও হাসপাতাল গেইটের সামনে, আমতলা, গালর্স স্কুল রোড, মঙ্গলবাড়িয়া বাজার, কালিবাড়ি, বুধির মোড়, ছোছাউড়া মসজিদের সামনে, বড় বাজার মোড়, জামতলা, থানা রোডসহ বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে দিনে-রাতে প্রায় ডজন খানিক বেওয়ারিশ কুকুরের সঙ্গবদ্ধ দল রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়।
কখনও কখনও রাস্তার মাঝে বসে ও শুয়ে থাকে। ফলে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা ভয়ে স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। পথচারীরা একা রাতে এসব রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে ভয় পায়।
স্কুলছাত্রী মোসা. সারমিন আক্তার বলেন, সকাল বেলা একাই স্কুল ও প্রাইভেট যেতে খুব ভয় লাগে। এ ছাড়াও মাঝে মাঝে কুকুরের দল একা পেলে ঘেউ ঘেউ করে তেড়ে আসে।
স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ী বিকাশ চন্দ্র দে বলেন, কুকুরের ভয়ে রাতে একা বাড়িতে আসা যায় না। বাড়ি যাওয়ার পথে অডিটরিয়াম, কালিবাড়ি ও বুধির মোড়ে ১০/১৫টি বেওয়ারিশ কুকুর ধাওয়াও করে। কুকুরের উৎপাতে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ব্যবসায়ী খোকন চন্দ্র দাস জানান, রাতে বাসায় ফেরার সময় কুকুরগুলো পথ রোধ করে ধরে। এ কারণে একজন সঙ্গীর অপেক্ষায় থাকতে হয়।
পুর্বধলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ডা. এম এম এ আউয়াল তালুকদার বলেন, ভ্যাকসিনাইজেশনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদা আক্তার বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে নিরীহ প্রাণীকে হত্যার বিষয়টি মানবতা পরিপন্থী হওয়ার কারণে বর্তমানে কুকুর নিধন বন্ধ করে ভ্যাকসিনাইজেশনের আওতায় আনা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩ বছর আগে পাগলা, অসুস্থ এবং বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করা হতো। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনে নিরীহ প্রাণীকে হত্যার বিষয়টি মানবতা পরিপন্থী হওয়ার কারণে বর্তমানে কুকুর নিধন বন্ধ করে।
এসআইএইচ