শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ঝিনাইদহ ছাড়লেন জেলা প্রশাসকসহ ২ পুলিশ কর্মকর্তা
জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান ও ঝিনাইদহ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের আন্দোলনের মুখে কর্মস্থল ছাড়লেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম। তিনি তিন দিনের ছুটি নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান ও ঝিনাইদহ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদকে।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা জেলা প্রশাসকের দুর্নীতি, দলীয়করণ, ঘুষ–বাণিজ্য ও অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য পাচারের অভিযোগ এনে তাঁর কার্যালয় ঘেরাও করেন। এসময় আন্দোলনের মুখে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান ও পুলিশের এসআই ফরিদ ছুটি নিয়ে কর্মস্থল ত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন। ছাত্রদের তোপের মুখে তিনি ৩ দিনের ছুটির আবেদন করে কর্মস্থল ছাড়েন। এরপর ছাত্ররা ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আজিম উল আহসানের সঙ্গে দেখা করে সদর সার্কেলে কর্মরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান ও সদর থানার এসআই ফরিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাঁদের অপসারণের দাবি জানান। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের ঝিনাইদহ থেকে সরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন পুলিশ সুপার।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু হুরায়রা, সাইদুর রহমান, এলমা খাতুন, রতনা খাতুন, হুসাইন আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এসএম সোমেনুজ্জামান সোমেন, সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মানিক, ইবি ছাত্রদলের আহবায়ক শাহেদ আহমেদ ও ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন, বখতিয়ার মাহমুদ, মাহবুব আলম মিলু, সাকিব আল হাসান, আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আবু হুরায়রা বলেন, এস এম রফিকুল ইসলাম ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল ঝিনাইদহে জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে দুর্নীতি, দলীয়করণ, ঘুষ-বাণিজ্য করে আসছিলেন। ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল, কালেক্টরেট স্কুলে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য নানাভাবে পাচার করছিলেন। এসব বিষয়ে তাঁদের কাছে অভিযোগ থাকায় তাঁরা ওই কর্মকর্তার অপসারণ চেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া পুলিশের দুই কর্মকর্তা সব সময় ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ আছে। এ কারণে তাদেরও অপসারণ দাবি করেছেন ছাত্র-জনতা।
এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রথীন্দ্র নাথ রায় বলেন, জেলা প্রশাসক স্যার তিন দিনের ছুটি নিয়েছেন। এরপর তিনি কার্যালয় ছেড়ে যান।
এদিকে জেলা পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান বলেন, অভিযোগের বিষয়ে সদর সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান এবং সদর থানার উপ-পরিদর্শক ফরিদ হোসেনকে জানানো হয়েছে। তাদের মধ্যে উপ-পরিদর্শকের বদলির বিষয়ে খুলনা রেঞ্জ অফিস এবং সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়াটার ব্যবস্থা নেবে।