অসুস্থ গাভি জবাই করে এড়ে গরুর মাংস বলে বিক্রি, অতঃপর...
অসুস্থ গাভি জবাই করে এড়ে গরুর মাংস বলে বিক্রি। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
একটু কম দামে ভালো গরুর মাংস পাওয়া যায় চুয়াডাঙ্গার ডিঙ্গেদহ বাজারে। এতোদিন এমনই জানতো এলাকার মানুষ। দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই গরুর মাংস কিনতে আসতো এই বাজারে। পহেলা জুলাই সোমবার বেরিয়ে আসলো থলের বিড়াল।
এদিন সকালে চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ বাজারে তারা একটি ভালো এড়ে গরু জবাই করে সেই মাংস সব বিক্রি করার পর ওই গরুর মাথা ও অন্ডকোষের অন্যান্য অংশগুলো অসুস্থ গাভি গরুর মাংসের সঙ্গে রেখে বেশী দামে এড়ে গরুর মাংস বলে বিক্রি করছিল কয়েকজন কসাই।
এরপর বেলা পৌনে ১২টা। মোবাইল ফোনে খবরটি জানতে পারেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ। এ সময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গা বাজার তদারকির অভিযান পরিচালনা করে।
ইতিমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোস্তাফিজুর রহমান সেখানে উপস্থিত হয়ে মাংস ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে তারা স্বীকার করে যে, একটি অসুস্থ গাভি গরু তারাই জবাই করে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। সেই সঙ্গে আরো একটি বড় প্রতারণার বিষয় হচ্ছে যে, এদিন সকালে তারা একটি ভালো এড়ে গরু জবাই করে সেই মাংস সব বিক্রি করার পর ওই গরুর মাথা ও অন্ডকোষের অন্যান্য অংশগুলো অসুস্থ গাভি গরুর মাংসের সঙ্গে রেখে বেশী দামে এড়ে গরুর মাংস বলে বিক্রি করছিল। পরবর্তীতে বাজার কমিটির মাধ্যমে কসাই ডালিম মিয়াকে হাজির করা হয়। অসুস্থ গাভি গরু জবাই করে মাংস বিক্রি ও এড়ে বলে অসুস্থ গাভীর মাংস বিক্রি প্রতারণা হাতেনাতে প্রমাণিত হয়। পূর্বেও তারা এ ধরনের কার্যকলাপ করেছে বলে জানা যায়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ জানান, একটি ফোন কলের মাধ্যমে জানতে পারি, ডিঙ্গেদহ বাজারে কিছু কসাই একটা অসুস্থ গাভি গরু বাইরে থেকে জবাই করে বাজারে এনে তার মাংস বিক্রি করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে তদারকি করার সময় এ বিষয়টি ধরা পড়লে কসাই ডালিম মিয়া পালিয়ে যায়। তার সঙ্গে থাকা অপর দু'জন কসাই খোকন মিয়া ও সুজন মিয়াকে মাংস বিক্রি কারার মুহূর্তে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে বাজার কমিটির মাধ্যমে কসাই ডালিম মিয়াকে হাজির করা হয়।
তিনি আরও বলেন, অসুস্থ গাভি গরু জবাই করে মাংস বিক্রি ও এড়ে বলে অসুস্থ গাভীর মাংস বিক্রি প্রতারণা হাতেনাতে প্রমাণিত হয়। পূর্বেও তারা এধরণের কার্যকলাপ করেছে বলে জানা যায়। এ অপরাধে তাদেরকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৪৩ ও ৪৫ ধারায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় প্রায় ২মনের অধিক অস্বাস্থ্যকর মাংস জব্দ করে বাজার কমিটির সহায়তায় জনসম্মুখে কেরোসিন তেল মাখিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোস্তাফিজুর রহমান, ডিঙ্গেদহ বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একটি দল।