২৩ দিন পর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শুরু
কয়লা সংকটে ২৩ দিন বন্ধ থাকার পর বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পুনরায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। ফলে রামপালের ২৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ মে) রাত ৯টা ১০ মিনিটে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে উৎপাদন শুরু হয়। এর আগে কয়লা সংকটের কারণে গত ২৪ এপ্রিল থেকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ ছিল। ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আসার পরে এই কেন্দ্রে আবার উৎপাদন শুরু হলো।
গত ২৫ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়া থেকে ৪৯ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ছেড়ে আসে বাংলাদেশি জাহাজ ‘বসুন্ধরা ইমপ্রেস’। গত ৯ মে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে জাহাজটি। সেখান থেকে ১৯ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা ছোট লাইটারে খালাস হয়। এর মধ্যে ৯ হাজার মেট্রিক টন শনিবার (১৩ মে) রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্রে পৌঁছে।
‘বসুন্ধরা ইমপ্রেস’ জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক শিপিংয়ের খুলনার সহকারী ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক বলেন, সোমবার (১৫ মে) ১০ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন কয়লা মোংলার বঙ্গবন্ধু-ঘষিয়াখালী চ্যানেল দিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে আনা হয়। জাহাজে থাকা বাকি ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ১৬ মে (মঙ্গলবার) মোংলা বন্দরে আসে জাহাজটি।
জানা গেছে, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর উৎপাদনে যাওয়ার ২০-২২ দিন পরই কয়লার মজুত শেষ হয়ে যায়। ডলার সংকটে এলসি খুলতে না পারায় রিজার্ভ কয়লা দিয়ে আরও ৫ দিন উৎপাদন চালু রাখা হয়। পরে ৪ জানুয়ারি ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার প্রথম ইউনিটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে কয়লা সরবরাহ স্বাভাবিক হলে এক মাসের মাথায় আবার উৎপাদনে ফেরে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। গত ১৫ এপ্রিল রাত থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আবারও বন্ধ হয়ে যায়। তিন দিন বন্ধ থাকার পর ১৮ এপ্রিল সচল হলেও কয়লা সংকটে ২৩ এপ্রিল রাত থেকে ফের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড এর উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টায় রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সফলভাবে সিনক্রোনাইজেশন হয়েছে। ২৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা গ্রিডে দেওয়া হচ্ছে। ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টার বা এনএলডিসির চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বাড়ানো হবে।
তিনি আরও বলেন, নিয়মিত ৫৬০-৫৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছিল এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। উৎপাদিত বিদ্যুতের মধ্যে ৪৬০ মেগাওয়াট ঢাকার জাতীয় গ্রিডে এবং ২০০ মেগাওয়াট খুলনা-বাগেরহাটে সরবরাহ করা হচ্ছিল। নিয়মিত উৎপাদনের জন্য কেন্দ্রে দৈনিক ৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন। কিন্তু কয়লা সংকটে গত ২৩ এপ্রিল রাত থেকে কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ ছিল।
এসজি