নদীতে ফেলে হত্যার ঘটনায় সহকারী বন সংরক্ষক ক্লোজড
পিটিয়ে নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় যুবকের মৃত্যু হওয়ায় চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মাহবুব হাসানকে ক্লোজ করা হয়েছে। তাকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরনখোলা রেঞ্জের যোগদান করতে বলা হয়েছে।
গত ৭ এপ্রিল শুক্রবার ছুটির দিনে বড় ভাই সাগর নাথের সাথে সুন্দরবনের করমজলের ৮ নম্বর খালে মাছ ধরতে যান ছোট ভাই হিলটন নাথ। ওই সময় সাগর নাথের সাথে আরো দুইজন জেলে ছিলেন। এ সময় অভিযান চালান পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মাহবুব হাসানের নেতৃত্বে বন কর্মকর্তাসহ বনপ্রহরীরা। ওই রাতে খালে অভিযান চালিয়ে সাগর নাথের নৌকা ঘিরে ফেলেন বনবিভাগের লোকেরা। এরপর ওই নৌকাতে উঠেই বন বিভাগের স্প্রিড বোট ড্রাইভার রাজা ও বোটম্যান মিজান নৌকার জেলেদের বেদম মারধর শুরু করেন। এ সময় তারা সাগরের ছোট ভাই হিলটনকে মেরে খালে ফেলে দেন। এরপর থেকে নিঁখোজ থাকেন হিলটন। নিঁখোজের ৬ দিন পর করমজলের বনের ভিতর থেকে গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে হিলটনের লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে হিলটনের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে হিলটনের মরদেহ সমাহিত করা হয় তার নিজ বাড়িতেই। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
হিলটনের মা বিথিকা নাথ জানান, অন্যায়ভাবে আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি করেন। তারা সব সময় সাধারণ জেলেদের উপর হামলা করে।
হিলটনের বাবা মিঠুন নাথ জানান, আমার ছেলে ইপিজেড শ্রমিকের কাজ করত। তার ভাইয়ের সাথে মাছ ধরতে যেয়ে আজ তাকে লাশ হতে হলো। যারা আমার ছেলেকে মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে তাদের এখনও পুলিশ আটক করেনি।
এ বিষয়ে খুলনার দাকোপ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উজ্জল কুমার দত্ত বলেন,হিলটন নিহতের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তবে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে জানা যাবে হিলটন নিহতের মূল ঘটনা।
এ ব্যাপারে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মাহবুব হাসান জানান, পূবেই আমাকে শরণখোলা রেঞ্জের এসিএফ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও প্রশাসনিক কারণে কয়েকদিন চাঁদপাই রেঞ্জে কাজ করতে হয়েছে। সেখানে কাজ করার সময় হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ শিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছি । এখন আবার আমাকে সেই শরণখোলাতে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রশাসনিক কারণেই এসিএফ মাহবুব হাসানকে বদলি করে শরণখোলা রেঞ্জ কার্যালয়ে এসিএফের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। আর শরণখোলার এসিএফকে চাঁদপাই রেঞ্জ কার্যালয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এসআইএইচ