ঝিনাইদহে পুলিশে চাকরি পেয়ে আবেগাপ্লুত ৬৮ তরুণ-তরুণী
পুলিশে চাকরি নিতে ঝিনাইদহের যুবকদের ভিটেবাড়ি বিক্রির নজির রয়েছে। কথিত আছে এক সময় ছিল টাকা ছাড়া পুলিশে চাকরি মিলে না। তদবির আর টাকার কাছে চাকরি ছিল অধরা। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রে সেই বৃত্ত ভেঙ্গে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা ফিরেছে পুলিশে। ঝিনাইদহের সাবেক পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামানের মতো বর্তমান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমান (বিপিএম, পিপিএম, বার) ঝিনাইদহের বেকার যুবক ও তরুণ-তরুণীদের জন্য মাত্র ১২০ টাকায় আবেদন করে পুলিশে চাকরি দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন। বিনা টাকায় চাকরি পেয়েছেন জমজ দুই ভাইসহ ৬৮ তরুণ-তরুণী।
রবিবার (১৯ মার্চ) রাত ১১টার দিকে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমান। জমজ দুই ভাই হাসান ও হুসাইন এক সঙ্গে চাকরি পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। চাকরির পর পুলিশের মোবাইল দিয়েই মায়ের কাছে ফোন করেন। দুই ছেলের এক সঙ্গে চাকরি হওয়ার খবর পেয়ে আবেগ আর ধরে রাখতে পারেননি তাদের মা।
জেলার মহেশপুর উপজেলার আঁখিতারা খাতুন বলেন, স্বপ্ন ছিল পুলিশে চাকরি করার। কিন্তু স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবতার বিস্তার ব্যবধানে আশাহত হয়েছিলাম। হঠাৎ একদিন জানতে পারি পুলিশে চাকরি পেতে কোনো টাকা লাগে না। পরে ১২০ টাকায় আবেদন ফরম পূরণ করে লাইনে দাঁড়াই। বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়ে বিনা টাকায় চাকরি পেয়েছি।
আঁখি তারার বাবা আখের আলী বলেন, আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিন আজ। বিনা পয়সায় মেয়ে চাকরি পেয়েছে। টাকা ছাড়া মেয়ের চাকরি হবে ভাবতে পারিনি। চাকরি পাওয়াই প্রমাণ পেলাম পুলিশের চাকরিতে ঘুষ লাগে না।
পিতাহারা শাহরিয়ার জোবায়ের। লেখাপড়া ও নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিলেন শঙ্কার মধ্যে। পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি হয়েছে তার। নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আবেগাপ্লুত শাহরিয়ার জোবায়ের। কথা বলতে পারছিলেন না। সদর উপজেলার পোড়া বাকড়ি এলাকার এই তরুণ বলেন, আমার বাবা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন। আমার মা অনেক কষ্ট করে আমাকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। আমি বাংলাদেশ পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরেছি। দেশের জন্য নিজের জীবন বাজি রাখব।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমান জানান, জেলায় পুলিশের ৬৮ জন কনস্টেবল নিয়োগের জন্য ২, ৩ ও ৪ মার্চ দুই হাজার ৩৪৮ জন প্রাথমিক পরীক্ষায় অংশ নেন। এতে যাচাই-বাছাইয়ের পর শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করেন ৪১৮ জন চাকরি প্রার্থী। গেল ৯ মার্চ তাদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৬৪ জন। আর ১৯ মার্চ রবিবার চূড়ান্তভাবে মনোনীত হন ৬৮ জন।
এসআইএইচ