শীতে বেড়েছে রোগী, শয্যা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা

শীতের প্রকোপে সাতক্ষীরার হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বেশিরভাগ রোগীই ঠান্ডা-জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে বারান্দা ও মেঝেতেই রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে, আক্রান্ত রোগীদের ভিতরে সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশুরা। এদিকে, বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে কিছুটা হিমশিম খেলেও সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, সদর হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালে চার শতাধিক শিশুকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে ৫ শতাধিক শিশু। এছাড়া বাকি ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি আছে প্রায় শতাধিক শিশু। আর গত এক সপ্তাহে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে তিন শতাধিক শিশু।
তবে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক সংকট ও বেড খালি না থাকায় সেবা পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রোগীর অভিভাবকদের। বেডের অভাবে বারান্দায় ও মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা এক শিশুর পিতা আসাদুল ইসলাম বলেন, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ায় আমার ছেলেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। এখানকার চিকিৎসক ও নার্সরা আন্তরিকতার সাথে সেবা দিলেও হাসপাতাল থেকে কোন ওষুধ দেয়া হয়নি। সব বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে।
অপর এক শিশুর মা রমেছা বেগম বলেন, আমার মেয়ে গত সোমবার রাতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। রাতেই তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। আমার মেয়ে এখন আগের চেয়ে সুস্থ।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালে মোট ১০৭টি বেড রয়েছে। এসব হাসপাতালে ৪জন শিশু বিশেষজ্ঞ ও ৮জন অভিজ্ঞ শিশু চিকিৎসক রয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো: আবুল বাসার ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে সর্দি কাশি নির্মোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারনে এই অঞ্চলে প্রায় প্রতি বছরই শীতে কোল্ড ডায়রিয়া বাড়ে। তিনি বলেন, শিশুদের যথা সম্ভব ঠান্ডা থেকে দূরে রাখতে হবে। এই সময় শিশুদের বিশুদ্ধ খাবার পানি ও পুষ্টিকর খাদ্য খেতে দিতে হবে। অসুস্থ হলে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আহমেদ হোসাইন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, শীতে রোটা ভাইরাস জীবানুতে আক্রান্ত হয়ে এই ডায়রিয়া হচ্ছে। এছাড়া সর্দিকাশিতে আক্রান্ত শিশু রোগীও বৃদ্ধি পাছে। তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শিশুদের জন্য কোন ওষুধ ব্যবহার যাবে না। শিশু অসুস্থ হয়েছে বুঝতে পারলেই দ্রুত হাসপাতালে আনতে হবে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. মো: সবিজুর রহমান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, সাতক্ষীরা সদর ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধ মজুদ রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের এ বিষয়ে বাড়তি খেয়াল রাখার জন্য বলা হয়েছে।
এএজেড
