টাঙ্গাইলে শিক্ষককে মেরে বালুচাপা, পরকীয়া প্রেমিকাসহ আটক ৩
ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে আব্দুল হক মাস্টার (৫৮) নামে এক মাদরাসা শিক্ষককে ডেকে নিয়ে হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টায় বালু চাপা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পরকীয়া প্রেমিকা ও তার স্বামীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত আব্দুল হক (৫৮) উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের সারপলশিয়া এলাকার মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে এবং পলশিয়া দাখিল মাদসারার সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার সারপলশিয়া এলাকায় অভিযুক্ত জাহানারা ওরফে জয়নব বেগমের ঘরের পাশের বালুর নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা-পুলিশ।
আটকরা হলেন- সারপলশিয়া এলাকার পরকীয়া প্রেমিকা জাহানারা বেগম (৩৮) তার স্বামী আব্দুল বারেক (৪৮) এবং একই এলাকার সবুরের ছেলে ফারুক (২৫)।
আটকরা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে জাহানারা ওরফে জয়নব বেগমের সাথে শিক্ষক আব্দুল হকের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সময় তারা দুইজন মিলে এলাকায় সুদের ব্যবসা করতো। এর মধ্যে বেশ কিছু টাকা পেতো ওই শিক্ষক। এছাড়া তাদের সম্পর্কের কথা জয়নবের স্বামী ও তার পরিবার জেনে যাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে ডেকে নেওয়া হয়।
এর আগে ওই শিক্ষক বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। পরে সুদ ব্যবসায়ী পার্টনার জয়নব বেগমের বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে তাদের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে পুলিশের সহায়তায় জয়নবের বাড়ি গিয়ে বালুর নিচ থেকে ওই শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে শিক্ষকের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে হত্যার ঘটনা ফাঁস হওয়ায় আটকদের ঘটনাস্থলেই বিচার দাবি করা হয়। এ সময় একজন আসামি পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে।
শিক্ষক আব্দুল হকের ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার চাচাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ গুম করার জন্য বাড়ির সামনেই বালুচাপা দিয়ে রাখা হয়। জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, শিক্ষক নিখোঁজের ঘটনায় তার স্ত্রী থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে আসেন। পরে তাদের সঙ্গে নিয়ে জাহানারা ওরফে জয়নবের বাড়ি গিয়ে বালুর নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যার ঘটনায় জয়নব তার স্বামী এবং তাদের এক সহযোগীকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেছে।