এমন মানবিক চোরের মানবতা দেখে হতবাক এলাকাবাসী
১২ বছর আগে চুরি করা টাকা চিঠি লিখে ফেরত দিলেন চোর

ফেরত দেওয়া টাকা ও খামে মোড়ানো চিঠি: ছবি সংগৃহীত
১২ বছরেরও বেশি সময় আগে দোকান থেকে টাকা চুরি হয়। সেই টাকা এক যুগেরও বেশি সময় পরে গোপনে সেই মালিককে ফেরত দিলেন এক চোর। একটি খামে করে চুরির ৩ হাজার টাকা ও একটি চিরকুট রেখে যান দোকানের শাটারের নিচে। নিজের পরিচয় গোপন রেখে চিরকুটের মাধ্যমে নিজের কৃত কর্মের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন ওই চোর। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তবে এমনই ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে মধুখালী উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া বাজার পোল্টি ব্যবসায়ী কাইয়ুম মৌলিক তার দোকান খুলতেই একটি খাম দেখতে পান। খামটি খুলতেই এমন মানবিক চোরের মানবতা দেখে হতবাক হন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বাঙ্গাবাড়িয়া বাজারে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী কাইয়ুম মৌলিক ব্যবসা করে আসছেন। প্রতিদিনের মতো তিনি দোকানে খুলতে গিয়ে একটা চিরকুট ও একটা খাঁমে ৩ হাজার টাকা পান।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী কাইয়ুম মৌলিক গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিদিনের মতো সকালে দোকান খুলি। খুলে শার্টারের পাশেই দেখি একটা খাঁম পড়ে আছে। সেটি খুলে দেখি একটি চিরকুট এবং ৩ হাজার টাকা। আমি হতবাক হই, পরে চিরকুটটি পড়ে ওই মহান ব্যক্তিকে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমি মন থেকে দোয়া করি, সে যেন সর্বদা সুখে থাকে।
তিনি আরও জানান, চিরকটে লেখা, ‘আমি প্রায় ১২ বছর আগে আপনার দোকান থেকে টাকা চুরি করেছিলাম। টাকার পরিমাণ প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার মতো। আমি আসলে গরীব মানুষতো, কি বলব, শয়তানের আসওয়াই হোক আর নিজের অভাবের কারণেই হোক, চুরি করার কারণে আমি ভুল স্বীকার করছি। আসলে আমি বিষয়টি নিয়ে লজ্জিত এবং অনুতপ্ত। আমি এর জন্য ক্ষমা চাইছি। যেহেতু আপনি ৫ ওয়াক্ত নামাজ-কালাম পড়েন। আপনি অব্যশই জানেন যে, এ টাকার দাবি থাকলে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন না।’
এছাড়াও চিরকুটে লেখা, ‘১২-১৩ বছর পর আপনাকে সামান্য টাকাটা দিয়ে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। জানি এই সামান্য টাকা আপনার কিছুই হবে না। তাও এই টাকাটা গ্রহণ করে আমাকে আল্লারস্থে মাফ করে দিন। এই আশায় আপনাকে ৩ হাজার টাকা পাঠালাম, দয়া করে এটি নিয়ে আমাকে ক্ষমা করে দিন।’
ব্যবসায়ী কাইয়ুম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বাঙ্গাবাড়িয়া বাজারে পোল্ট্রি ব্যবসা করে আসছি। এমন মহৎ মনের মানুষ আমি পাইনি। সে হয়তো আমার দোকানের কর্মচারী ছিল। এখন তার আর কোনো পরিচয় প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই। তিনি টাকাটা ফেরত দিয়ে নিজেই আল্লাহর দরবারে মোমিন হিসেবে নিজেকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।
