নরসিংদীতে বজ্রপাতে নারীসহ ৫ জনের মৃত্যু
নরসিংদীর বিভিন্ন উপজেলায় বজ্রপাতে নারী ও কিশোরসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ মে) পৃথক সময়ে রায়পুরা, মনোহরদী, শিবপুর ও নরসিংদী সদর উপজেলায় এসব ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন- শিবপুর উপজেলার সাধারচর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩০), রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরেরচর গ্রামের মোমরাজ মিয়ার স্ত্রী সামসুন নাহার (৪৫), একই উপজেলার নিলক্ষা ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে জাবেদ মিয়া (১২), মনোহরদী উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের পাতরদিয়া গ্রামের মৃত বাদল মিয়ার ছেলে রায়হান মিয়া (৩০) এবং নরসিংদী শহরের পশ্চিম কান্দাপাড়া মহল্লার সুকুমার রায়ের ছেলে শুপ্তকর (১৪)।
নিহতদের স্বজনরা জানান, সকালে কৃষিজমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন শিবপুর উপজেলার সাধারচর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে মো. খোকন মিয়া। পরে তাকে দ্রুত পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিয়াজ মোর্শেদ জানান, কৃষক খোকন মিয়াকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।
রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিন জানান, বেলা ১১টার দিকে বজ্রপাতে নিহত হন উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরের চর গ্রামের গৃহবধূ সামসুন নাহার। শামসুন নাহার বাড়ির পাশের একটি জমি থেকে খড় আনতে গিয়েছিলেন। এসময় বজ্রপাতের আঘাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা শামসুন্নাহারের মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিলক্ষা ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. আক্তারুজ্জামান শামীম জানান, দুপুর ২টার দিকে শিশুরা মাঠে ফুটবল খেলছিল। এসময় বজ্রপাত হলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল নিলক্ষা ইউনিয়নের গোপীনাথপুরে জাবেদ মিয়া নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দুপুরে বাড়ির অদূরে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন পাতরদিয়া গ্রামের রায়হান মিয়া। হঠাৎ বজ্রসহ ঝড়-বৃষ্টিতে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রায়হান। পরে স্বজনরা তার লাশ উদ্ধার করেন। দুই মাস আগে ছুটিতে কাতার থেকে দেশে আসেন তিনি।
দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান শরিফ মাহমুদ খাঁন বাহালুল জানান, রায়হানের বাবাও কয়েক বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। আজ রায়হান বজ্রপাতে মারা গেছেন।
এ ছাড়া নরসিংদী শহরের পশ্চিমকান্দাপাড়া মহল্লার পুকুরে গোসল করতে গেলে বজ্রপাতে মারা যায় শুপ্তকর (১৪)। সে স্থানীয় সাটিরপাড়া কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
ঘটনার বিষয়ে রায়পুরা ও শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাদের মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন রিসিভ করেননি এবং শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিনিয়া জিন্নাতের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
এভাবে বজ্রপাতের ঘটনায় নরসিংদী ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, এসব মৃত্যুর ঘটনা খুবই আশ্চর্যজনক।
সতর্কতার বিষয়ে তিনি বলেন, বজ্রসহ বৃষ্টি হলে কেউ যেন বাইরে না যায়, ঘরে থাকলেও কেউ যেন খালি পায়ে না থাকে। এ ছাড়া বড় জাতের গাছের চারা রোপণ করারও পরামর্শ দেন তিনি। আর এতে করে জানমালের রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে।
এসজি