কাঁটাতারের বেড়া থেকে মুক্তি পেল সেই ৪ পরিবার

মামলায় সাক্ষী দেওয়ায় মাদারীপুরের কালকিনিতে ৪ দিন কাঁটাতারের বেড়ায় অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে প্রশাসনের সহযোগিতায় মুক্তি মেলেছে ৪ পরিবারের।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ৪ পরিবার। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কায়েসুর রহমান ও কালকিনি থানার এসআই মো. রাজিব হোসেন ফোর্স নিয়ে কাঁটাতারের বেড়া কেটে বন্দীদশা থেকে তাদের মুক্ত করেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের বরাতে পুলিশ জানায়, প্রায় ১২ বছর আগে উপজেলার রমজানপুর এলাকার উত্তর চর আইরকান্দি গ্রামের সুজন শিকদার বাদী হয়ে একই এলাকার তাইজুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মাদারীপুর আদালতে একটি মারামারি মামলা করেন। এই মামলায় সুজনের পক্ষে সাক্ষী দেন একই বাড়ির জাহাঙ্গির শিকদার, মনির শিকদার ও শওকত শিকদার। পরে তাদের সাক্ষীর ভিত্তিতে কয়েকদিন কারাগারে থাকতে হয় তাইজুলকে। সাক্ষী দেওয়ার অপরাধে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামি তাইজুল ইসলামের নেতৃত্বে সালমান ও সাকিলসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় ক্ষমতাসীন লোকেরা মিলে সাক্ষী জাহাঙ্গির শিকদার, মনির শিকদার, শওকত শিকদার ও নাসির শিকদারের বসতঘরের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে তাদের বন্দী করে রাখে।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিংকি সাহার কাছে ও কালকিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ভুক্তভোগী পরিবার। পরে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. কায়েসুর রহমান, ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মো. হানিফ চোকদার ও কালকিনি থানার এসআই মো. রাজিব হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের মুক্ত করেন।
শওকত শিকদার ও নাসির শিকদারের পরিবারের সদস্যরা বলেন, সুজনের মামলার সাক্ষী দেওয়ায় তাইজুল ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বসতঘরের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আটকে রাখে। উপজেলা প্রশাসনের ও পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে তারা এসে তারের বেড়া কেটে আমাদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করেছে।
অভিযুক্ত তাইজুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ার কারণে আমি বেড়া দিয়েছিলাম। তারা যদি আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী না দিতো তাহলে কি কাঁটাতারের বেড়া দিতাম?
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামিম হোসেন বলেন, তাইজুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ায় ৪ পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. কায়েসুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাঁটাতারের বেড়া কেটে অবরুদ্ধ থাকা চার পরিবারকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ধরনের কাজ পুনরায় কখনো করবেন না বলে তাইজুল ইসলাম আমাদের কাছে অঙ্গীকার করেছেন।
এসজি
