চিনি-চুন দিয়ে খেজুরের গুড় তৈরি, দাম ৩০০!

চিনি ও চুন মিশ্রিত ভেজাল খেজুরের গুড় প্রস্তুতের সময় ভোক্তা অধিকারের অভিযানে এক ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় প্রস্তুত করা প্রায় এক মণ (৪০ কেজি) গুড় নষ্ট করা হয়। খোলা বাজারে এই চিনি ও চুন মিশ্রিত ভেজাল খেজুরের গুড় বিক্রি হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। এদিকে প্রস্তুতকারকের দাবি, দাম সর্বসাধারণের নাগালে রাখতেই ভেজাল গুড় প্রস্তুত করতে হয়।
বৃহস্পতিবার(২২ ডিসেম্বর) ভোরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ধানধারা গ্রামের মশগুল গুড় ভান্ডারে এই অভিযান চালায় জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
মশগুল গুড় ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মো. মশগুল ব্যাপারী। তার বাড়ি রাজশাহী জেলার বাঘা থানায়। তিনি প্রতি শীত মৌসুমে শিবালয় ও হরিরামপুর এলাকায় আসেন এবং রস সংগ্রহ করে গুড় প্রস্তুতের কাজ করেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় মানিকগঞ্জের এই অঞ্চলটি (হরিরামপুর, শিবালয়) খেজুরের গুড় উৎপাদনের জন্য খুবই জনপ্রিয় ছিল। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল প্রায় শতাধিক পরিবার। কালের বিবর্তনে এই জনপদ আজ গাছি শূন্য হয়ে পড়েছে। এ সুযোগে বাইরের জেলা থেকে গাছিরা এসে রস সংগ্রহ করছে, প্রস্তুত করছে গুড়। এ সকল গুড়ে বেশিরভাগই ভেজাল মিশ্রিত। এদের জন্য মানিকগঞ্জের প্রকৃত গাছিদের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।
চিনি ও চুন মিশিয়ে গুড় প্রস্তুতের কথা স্বীকার করে মশগুল ব্যপারী বলেন, খালি রসের গুড়ের প্রতি কেজির দাম পড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। এত দাম দিয়ে কেউ গুড় কিনতে চায় না। সেজন্য রসের সঙ্গে কিছুটা চিনি মিশিয়ে গুড় তৈরি করে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। বাধ্য হয়েই আমরা এমনটা করি।
এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, মানিকগঞ্জের হাজারি গুড়ের সুনাম দেশজুড়ে। সেজন্য অন্য জেলা থেকে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী এই জেলায় এসে গুড় তৈরি করে মানিকগঞ্জের গুড় বলে বিক্রি করছেন।
তিনি জানান, ৫০ কেজি গুড়ের মধ্যে ৩০ কেজি চিনি মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করছেন তারা। গুড় সাদা করার জন্য পরিমাণ মতো চুন মেশান। চিনি মিশিয়ে গুড় তৈরি করার দায়ে মশগুল ব্যাপারীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভেজাল গুড় তৈরির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।
এসআইএইচ
