ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী সদস্যকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার ডাসার ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম ওরফে ভাসাই শিকদারসহ তার তিন অনুসারির বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত এক নারী সদস্যকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াছমীনের কাছে বিচার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী ইউপি সদস্য।
ভুক্তভোগী মিনু খানম ডাসার ইউনিয়নের মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
অভিযোগে জানা যায়, সোমবার ডাসার ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মিনু খানম তার নির্বাচনী এলাকার এক ব্যক্তির মৃত সনদে চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের সই করাতে কমলাপুর বাজারে যান। বাজারে যাওয়ার পরে ওই সনদে সই না দিয়ে চেয়ারম্যান তার ইউনিয়নের নারী সদস্যকে প্রকাশ্যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকা তার তিন অনুসারী ওই নারী সদস্যকে জুতা দিয়ে মারধর করে। এতে নারী সদস্যের বাম হাতের আঙ্গুলে আঘাত লাগলে তিনি স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে এ ঘটনার বিচার চেয়ে ডাসার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াছমীনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে মিনু খানম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যানের কাছে সই আনতে যাওয়ার পরেই তিনি বলে উঠল, ‘সামনে থেকে সর, নয়তো তোর ঠেঙ্গ ভেঙে দিব’। এগুলো বলেই তার লোকজন আমাকে মারধর শুরু করে। আমি মাটিতে পড়ে গেলে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে। চেয়ারম্যান আমাকে বলেছে-আমি যেন পরিষদে না যাই। তিনি আমাকে সহ্য করতে পারেন না। মাঝেমধ্যেই আজেবাজে কথা বলে, দুর্ব্যবহার করে।’
মিনু খানম আরও বলেন, ‘আমি ন্যায়ের কথা বলি। চেয়ারম্যানের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলি। এর জন্য ওই চেয়ারম্যান আমাকে আগেও একবার পরিষদ থেকে লাঞ্ছিত করে বের করে দেয়। আমাকে নিয়ে চেয়ারম্যানের অভিযোগ-নির্বাচনে আমি তার পক্ষে ছিলাম না। তার হয়ে ভোট চাইনি। এ কারণে তিনি আমার সঙ্গে শুরু থেকে অপমান, লাস্থিত করেই যাচ্ছে। আজকের (সোমবার) ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে ইউএনও স্যারের কাছে যাই। পরে তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে বললে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার চাই।’
এদিকে ডাসার ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিনি দুটি মৃত সনদ নিয়ে আসে। আমি একজন ব্যক্তিকে চিনি। তারটা আমি সই দিছি। আরেকজনকে আমি চিনি না। তাই পরের সনদটায় আমি সই দেই নাই। সই না দেওয়াই ওই সদস্য আমাকে আজেবাজে কথা বলেছে, মা-বাবা তুলে কথা বলেছে। আমি তার সঙ্গে কোনও খারাপ কথা বা আঘাত করি নাই।’
এ ব্যাপারে ডাসার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াছমীন ঢাকা প্রকাশকে বলেন, ‘ডাসার ইউপির এক নারী সদস্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারধর ও লাঞ্ছিতের কথা বলে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি আমরা আমলে নিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এসআইএইচ
