ইয়ারপুর ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৪ বিদ্রোহী প্রার্থী
সাভারের আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে মোশাররফ হোসেন মূসাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। কিন্তু তার বিপক্ষে নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের আরও চার প্রভাবশালী প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন কার্যালায়ে মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুন।
সাভার উপজেলা নির্বাচন কমিশনারের কার্যালায় সূত্রে জানা যায়, ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ২৯ ডিসেম্বর। এতে প্রায় ৮৪ হাজার ভোটার ৪২টি কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এই নির্বাচনে অংশ নিতে ১ ডিসেম্বর মনোয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত মোট ১৩ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন। কোনো প্রার্থী যদি চান ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। আগামী ১১ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
উপজলা নির্বাচন কমিশনারের কার্যালায়ে মনোয়নপত্র জমা দেওয়া ১৩ জনের মধ্যে মোল্লা মোশাররফ হোসেন মূসা ছাড়াও আওয়ামী লীগের আরও চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মোল্লা মোশাররফ হোসেন মূসা ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বাকি চার প্রার্থী হলেন- আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দেওয়ান মো. মেহেদী মাসুদ মঞ্জু, একই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন আহমেদ ভূইয়া, আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. কবির হোসেন সরকার ও জাতীয় শ্রমিকলীগ আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মো. আকবর হোসেন মৃধা।
মনোয়নপত্র জমা দেওয়া সুমন আহমেদ ভূইয়ার বাবা মরহুম সৈয়দ আহমেদ ভূইয়া ইয়ারপুর ইউনিয়নের তিনবারের চেয়ারম্যান ছিলেন। সর্বশেষ এ বছরের ৫ জানুয়ারি নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সৈয়দ আহমেদ ভুইয়া। গত ২৮ অক্টোবর তার মৃত্যুতে চেয়ারম্যান পদ শূন্য হলে আগামী ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ধার্য করে নির্বাচন কমিশন।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া মোশাররফ হোসেন মূসা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। তারা মনোনয়ন (দলীয়) চেয়েও পাননি। তারপরেও তারা নির্বাচন অফিসে মনোয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এবিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।
এবিষয়ে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দেওয়ান মো. মেহেদী মাসুদ মঞ্জু ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, নির্বাচন করব কি করব না এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ, জমা দিয়েছি।
আরেক প্রার্থী আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন আহমেদ ভূইয়ার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নির্বাচনী জনসভায় আছি। তাই বক্তব্য দেওয়া সম্ভব নয়।
আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. কবির হোসেন সরকারের মোবাইলে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিদ্রোহী প্রার্ধীদের বিষয়ে দল কী সিদ্ধান্ত নেবে সে বিষয়ে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, যদি ইউনিয়নের কেউ নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে থানা কমিটি। কিন্তু থানা কমিটির কেউ যদি নির্বাচন করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে জেলা কমিটি।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, কেউ যদি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করে তবে তার বিরুদ্ধে দল অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।
আওয়ামী লীগের পাঁচ প্রার্থী ছাড়াও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া বাকি আট প্রার্থী হলেন- বকুল ভূইয়া, মো. জিল্লুর রহাম, মো. দেলোয়ার হোসেন সরদার, মো. আবুল হোসেন, মিনি আক্তার উর্মি, মো. আল কামরান, মো. আব্দুর রহমান ও মো. মজুল হক দেওয়ান। এর মধ্যে মিনি আক্তার উর্মি সাভার উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ঢাকা ১৯ আসনের সাবেক সাংসদ এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন বাবুর ফুফাতো বোন বলে জানা গেছে।
এসএন