বিসিকের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে এলাকাবাসীর বাধা
মানিকগঞ্জের বিসিক শিল্প নগরীতে সীমানা প্রাচীর তোলার সময় বাধা দিয়েছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর অবস্থানে অর্ধবেলা পর্যন্ত স্থগিত থাকে নির্মাণ কাজ। প্রাচীর নির্মাণ হলেও পথচারী যাতায়াতের জন্য ব্যবস্থা রাখা হবে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পক্ষান্তরে জনস্বার্থে যাতায়াতের প্রধান সড়ক হিসেবে বিবেচিত বিসিক শিল্প এলাকার অভ্যন্তরীন সড়কটি কৃষি পণ্য আনা-নেওয়ায় ব্যবহার করতে দেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগির ইউনিয়নে এই বিসিক শিল্প নগরীর অবস্থান। নিরাপত্তা জনিত কারণেই দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর সীমানা প্রাচীর তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সকাল দশটার দিকে বিসিক কর্তৃপক্ষ তাদের সীমানা প্রাচীর তুলতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা এসে বাধা দেয়।
বিসিকের অভ্যন্তরীণ এই সড়কটি ব্যবহারের ফলে এলাকাবাসীর সাথে ঢকা-আরিচা মহাসড়কের দূরত্ব কমেছে প্রায় এক কিলোমিটার। বিসিক শিল্প নগরির সাথে এলাকাবাসীর যোগাযোগের জন্য এক দশক আগে তৈরি করা হয়েছে সরকারি অনুদানের রাস্তা। গড়ে উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জানা গেছে, ইউনিয়নের জায়গীর, মেকশিমুল, ঢাকুলী, বাইচাইল, উকিয়ারা এবং চান্দি গোলড়া এলাকার প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। যাতায়াত এবং কৃষি পণ্য আনা নেওয়ায় এ সড়কটির ব্যবহার করে।
রায়হান মিয়া নামের এক কৃষক বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই রাস্তা ব্যবহার করে কৃষি পণ্য আরতে নিয়ে যাই। এই রাস্তা বন্ধ করে দিলে আমাদের আরো দুই-তিন কিলোমিটার ঘুরে মহাসড়কে উঠতে হবে। এর ফলে যানবাহনের ভাড়া দ্বিগুণ হবে। আমার মত যারা কৃষিকাজ করে আমরা সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমরা এই রাস্তা বন্ধ করতে দিব না।'
আনোয়ার হোসেন নামের এক বাসিন্দা বলেন, 'বিসিকের এই সড়কটি আমাদের প্রধান সড়ক। এই রাস্তাটা ব্যবহার করলে আমাদের হাটবাজার, দোকানপাট সব কিছুতেই যোগাযোগ ব্যবস্থাটা সহজ হয়। বিকল্প যে সড়কটি সেটি ব্যবহারের অনুপযোগী, ভাঙাচোরা এবং অধিক দূরত্বের। এখন আমরা ১০ মিনিট হাঁটলেই সড়কে উঠতে পারি। এই রাস্তাটি ব্যবহার করতেন না পারলে আমাদের রাস্তার দূরত্ব বাড়বে ৩০ মিনিট। আমাদের এলাকায় যাতায়াতের জন্য কোন যানবাহন নেই। পায়ে হেঁটে এতদূর পাড়ি দিয়ে মহাসড়কে ওঠা আমাদের জন্য খুবই দুর্ভোগ হবে। আমাদের কৃষি পণ্য আনা নেওয়া এবং পথচারী যাতায়াতের ব্যবস্থা বন্ধ করা যাবে না। অন্যথায় আমরা এই জুলুম মানবো না।'
স্থানীয় ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি (ইউনিয়ন পরিষদ) সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম রউফ বলেন, 'সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে আমাদের কোন কিছু জানানো হয়নি। সকালে এলাকাবাসী দেখার পর সকলে সম্মিলিতভাবে বাধা দেয়। আমরা বিসিক কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি। আমাদের কৃষি পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য ভ্যান গাড়ি এবং পথচারী যাতায়াতের জন্য যেন ব্যবস্থা রাখা হয় এ বিষয় নিয়ে তাদের সাথে কথা বলব।' এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, নিরাপত্তা জনিত কারণে সীমানা প্রাচীর তোলা হচ্ছে। তবে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা রাখা হবে।
এএজেড