নাইট গার্ড ও চেইনম্যানে চলছে সেটেলমেন্ট অফিস!
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দীর্ঘদিন ধরে একটি ভাড়া বাসায় চলছে উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস। চেইনম্যান আর নাইট গার্ড দিয়ে চলে অফিসের কার্যক্রম। অফিসের ভিতরে আসবাবপত্রগুলো ফাঁকা। আলমারি, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও কম্পিউটার কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা রয়েছে। অফিসে কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিয়োগ থাকলেও তারা ডেপুটেশনে অন্যত্র চলে গেছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত ভূমি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ উপজেলার সাধারণ মানুষ।
উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে উপজেলায় জরিপ কাজ করে সেটেলমেন্ট অফিস। ১২ বছর পরপর পৌরসভা ও ইউনিয়নে ভূমি জরিপের কাজ করার নিয়ম থাকলেও ২৮ বছরের মধ্যে জরিপের কোন কাজ হয়নি। তবে, তৎকালীন সময়ে ভূঞাপুর পৌরসভাটি গোবিন্দাসী, অলোয়া ও ফলদা নিয়ে গঠিত ছিল। ফলে ৬টি ইউনিয়নে ১০৭টি মৌজার জরিপ কাজ হয়। পরে ৩ টি ইউনিয়ন থেকে কয়েকটি গ্রাম নিয়ে পৌরসভা গঠিত হলেও পরবর্তীতে পৌরসভায় ভূমি জরিপ কাজ হয়নি। এছাড়া ১৯৮৬ সালে গাবসারা ইউনিয়নের একটি মৌজা অতিরিক্ত হওয়ায় সেই সময়ে জরিপ কাজ হয়নি।
উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে ১৯জন কর্মকর্তা/কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও দুইজন কর্মচারী ব্যতিত অন্যরা ডেপুটেশনে অন্যত্র চলে গেছে। তবে গতমাসে উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা হিসেবে মজিবুর রহমান নামের একজনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি কালিহাতী উপজেলা উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় মাঝেমধ্যে ভূঞাপুর উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে আসেন।
এদিকে, উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে ভূমি জরিপের নোটিশ প্রদান করা, মৌজার নকশা ও কাঠামো স্থাপন, জমির মালিকানা ও দখল সংক্রান্ত প্রমাণাদি উপ-স্থাপন, আমিন দল কর্তৃক প্রস্তুতকৃত খাতিয়ান বা পর্চা জমির মালিককে সরবরাহ করা বিভিন্ন ধরণের সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও এসব সেবা থেকেও বঞ্চিত রয়েছে এ উপজেলার লোকজন।
ভুক্তভোগী লোকজন জানান, অফিসের চারপাশটা আগাছায় ভরপুর। দূর থেকে দেখলে মনে হয় পরিত্যক্ত কোন বাসা-বাড়ী। তাছাড়া অনেক সময় সেটেলমেন্ট অফিসে কাঙ্ক্ষিত সেবাও মেলে না। ঠিকমতো কোন কর্মকর্তা আসে না। বিভিন্ন সময়ে অফিসে কাজ নিয়ে এসে ফেরত যেতে হয়। অফিস থেকে বলে দেয় টাঙ্গাইল থেকে কাগজপত্র উঠাতে হবে। সেখানে গেলে সব পাবেন। এ অফিসটা আধুনিকায়ন করা খুব জরুরি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী সেটেল অফিসার (অতিরিক্ত) মজিবুর রহমান জানান, গত মাসে এখানে অতিরিক্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছি। জরিপ না থাকায় অফিসে তেমন কোন কাজ নেই। সেবা গ্রহীতা আসলে তাদেরকে কোথায় তথ্য পাওয়া যায় সেটার জানিয়ে দেওয়া হয়। অফিসের সকল ধরণের কাগজপত্র ডিসি অফিসে থাকায় সেখান থেকে সেবা নিতে হয়। তবে একটি মৌজার জরিপের কাজ রয়েছে।
এএজেড