পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতার মৃত্যু
মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর ফেরিঘাট এলাকায় বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় শহিদুল ইসলাম শাওন (২০) নামের এক যুবদলে কর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেডিকেলের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।
তিনি আরও জানান, বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে মুন্সিগঞ্জ মুক্তারপুরে সংঘর্ষে মাথায় আঘাত পান শাওন। ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে ঢাকা মেডিকেল এনে ভর্তি করানো হয়।বুধবার হাসপাতালে শাওনের বন্ধু নাহিদ খান জানান, শাওন মিশুক গাড়ি চালক। পাশাপাশি যুবদলে কর্মী হিসেবে কাজ করতো। তিনি বিএনপির সমাবেশে গিয়ে আহত হন। তার বাড়ি মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভার মুরমা গ্রামে। বাবার নাম মো. সোহরাব আলী। শাওনের মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তারপুর পুরাতন ফেরি ঘাট এলাকায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাঁধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় বিএনপির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশকে চার দিক দিয়ে ঘিরে ফেলে। ছত্র ভঙ্গ করতে পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ, ইটপাটকেল ও পরে টিয়ার সেল ও সর্টগ্যানের গুলি ছুড়ে। ওই এলাকা রণক্ষেত্রে রুপান্তরিত হয়।
স্থানীয়রা জানান, মুক্তারপুর পুরাতন ফেরি ঘাট এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশে যোগদিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যানার সহ মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করে ওখানে জড়ো হতে থাকে। এসময় প্রথমে পুলিশ মিছিলে বাঁধা দেয় এবং মিছিলের ব্যানার টানদিয়ে ছিড়ে ফেলে। এতে বিএনপির কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ করে। পরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, টুয়ারসেল ও সর্টগ্যানের গুলি ছুড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্র রুপান্তরিত হয়।
গতকাল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মিনহাজুল ইসলাম, সদর থানা ওসি মোঃ তারিকুজ্জামান সহ ২৫ জন পুলিশ সদস্য সাংবাদিক কাজী দীপু সহ বিএনপির নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ ও কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়। আহতদের অনেককে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে গুরুতর দেখে বেশ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
আহত মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ তারিকুজ্জামান জানান, সদরের মুক্তারপুরে একটি কোল্ড স্টোরেজের ভিতরে তাদের একটি সভা করার কথা ছিলো। কিন্তু তারা পুরাতন ফেরি ঘাট এলাকায় এসে জড়ো হয়ে একরকম পরিকল্পিত ভাবে পুলিশের উপর হামলা করে। পুলিশ আত্নরক্ষায় প্রথমে লাঠিচার্জ পরে টিয়ারসেল ও সর্টগ্যানের গুলি চালানো হয়। পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় সমাবেশের কোন অনুমতি ছিলো না। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এপর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
এএজেড