৯ বছর ধরে বন্ধ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম

নেত্রকোনা জেলার সীমান্তে শিক্ষক না থাকায় ৯ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। ক্লাস রুম, পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিল ও বেঞ্চ থাকা সত্ত্বেও নেত্রকোনার কলমাকান্দায় শিক্ষক না থাকায় ৯ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের মানিকপুর এলাকায় গেলে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির খোঁজ পাওয়া যায়। যার নাম মানিকপুর জিবিসি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি চালুর নেই কোন পদক্ষেপ।
২০০৫ সালে জাপান সরকারের অর্থায়নে মানিকপুর এলাকায় জিবিসি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। এরপর বিদ্যালয়টিতে চারজন শিক্ষক নিয়োগ দেয় জিবিসি। ওই সময়ে বিদ্যালয়টিতে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান কার্যক্রম চলছিল। আর বিদ্যালয়টির দেখভালসহ আর্থিক সহযোগিতার দায়িত্বে ছিল জিবিসি নামে খ্রিষ্টানদের একটি সংগঠন ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা।
পরবর্তী সময়ে ২০১৩ সালে ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশের শিক্ষা প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বিদ্যালয়টিতে আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকেই মানিকপুর জিবিসি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় ক্ষুদিরাম হাজং বলেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ ও জিবিসি যৌথভাবে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চালাত। বিদ্যালয়টি চালু থাকাকালীন ৫-৭টি গ্রামের অন্তত দেড় শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত। আর ৯ বছর ধরে বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকায় ২ থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে গিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা করতে হচ্ছে।
আদিবাসী নেতা বদুয়েল চিসিম বলেন, কলমাকান্দা উপজেলায় এরকম আরও বেশ কিছু বিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোও বর্তমানে বন্ধ আছে। এ নিয়ে আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি স্কুলগুলো চালু করতে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি রমেশ চেব্রা বলেন, ওয়ার্ল্ডভিশনের সহযোগিতায় জিবিসির পরিচালনায় সেই সময় ওই বিদ্যালয়টি ভালোভাবেই চলছিল। শিক্ষার্থীও ছিল প্রায় দেড় শতাধিক। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টিতে ওয়ার্ল্ডভিশন সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকেই আর্থিক সংকটের কারণে বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি আবারো চালু হোক।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফুর বলেন, বিদ্যালয় স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে নতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করার সুযোগ আছে।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হাসেম বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য তার জানা নেই। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই বিদ্যালয়টি চালু করা যায় কিনা তা চেষ্টা করে দেখবেন। বিদ্যালয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।
এএজেড
