ভিডিও'র ভয় দেখিয়ে ৫ বছর ধর্ষণ, কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতা
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীকে একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ওই তরুণীর অজান্তে ভিডিও ধারণ করে এবং সেই ভিডিও'র ভয় দেখিয়ে টানা ৫ বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মামুন নকরেক। অভিযুক্ত মামুন উপজেলার অরনখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বুধবার (২৪ আগস্ট) বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে ওইদিন রাতেই মামুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, মামুনের সঙ্গে ওই তরুণীর ৫ বছর আগে সম্পর্ক হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওই তরুণীর। কোনও এক সময়ে তরুণীর অজান্তে ভিডিও ধারণ করেন মামুন। এরপর থেকে ভিডিও প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে টানা ৫ বছর ধরে তাকে ধর্ষণ করে আসছে মামুন। এক পর্যায়ে ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
এ ছাড়া বিষয়টি প্রকাশ করলে ওই তরুণীকে হত্যার এবং ভিডিও প্রকাশ করারও হুমকি দেয় মামুন। সম্প্রতি শরীরের গঠন দেখে মেয়েটির মায়ের সন্দেহ হয়। পরে মায়ের চাপে বাধ্য হয়ে সব বলে দেয় ওই তরুণী।
ভুক্তভোগীর মা জানান, দিনমজুরি করে মেয়েকে শিক্ষিত করার চেষ্টা করছেন তিনি। বর্তমানে তার মেয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। মেয়ের কাছে জানতে পারেন ২০১৭ সালে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে মামুনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে তার মেয়েকে ধর্ষণ করেন মামুন। বর্তমানে তার মেয়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে অনেকেই মীমাংসার চেষ্টা করেছে। এরপর আইনের দ্বারস্থ হন তিনি।
ধর্ষিত তরুণী বলেন, মামুন আমাকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছে। একদিন বাড়িতে কেউ না থাকায় ফের ধর্ষণ করে এবং গোপনে ভিডিও ধারণ করে। পরে ওই ভিডিও দেখিয়ে আমাকে জিম্মি করে প্রায় সময় ধর্ষণ করত। ভিডিও ফেইসবুকে দেওয়ার হুমকি দিত। কাউকে জানালে হত্যারও হুমকি দিত।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মধুপুর থানান উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা মামুনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামুন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল আদালতের পরিদর্শক তানবীর আহমেদ বলেন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব রহমান আসামি মামুনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এসআইএইচ