লাউ চুরির জেরে হত্যার ২৭ বছর পর আসামি গ্রেপ্তার
গাজীপুরের কালীগঞ্জে জুট মিল কারখানার শ্রমিক বিল্লাল হোসেন ওরফে বিলুকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী আব্দুল আজিজকে (৫৫) ২৭ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১ এর সদস্যরা। সোমবার (১৫ আগস্ট) মধ্য রাত আড়াইটায় নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাধাররচর ইউনিয়নের মৈশাদি গ্রামের শ্বশুর বাড়ী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি নোমান আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ওইদিন কালীগঞ্জ থানায় ঘটনার সাথে জড়িত ফালান, কাদির, ছাদির, কালাম, বাজিত, আব্দুল আজিজ, ওসমান, আব্দুছ ছামাদ, হুমায়ুন এবং রুস্তম আলীসহ ১৩ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থকেই গ্রেপ্তারকৃত আসামী আব্দুল আজিজ জাতীয় পরিচয় পত্রে (এনআইডি) পরিচয় গোপন করে আব্দুল আজিজ মোল্লা নাম দিয়ে স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করে নরসিংদীর শিবপুরের মৈশাদি গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে থেকে কাঁচা মালের ব্যবসা করে আসছে।
হত্যার শিকার বিল্লাল হোসেন ওরফে বিলু (৩৫) গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ঈশ্বরপুর গ্রামের মৃত সৈয়দ আলী ওরফে কিতাব আলীর ছেলে। আসামী আব্দুল আজিজ একই উপজেলার বাহাদুরসাদী গ্রামের মৃত আলফাজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে। তারা উপজেলার খালপাড়া এলাকার ন্যাশনাল জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত।
র্যাব কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নোমান আহমেদ জানান, ১৯৯৫ সালের ৭ ডিসেম্বর সকাল সোয় ৮টায় আসামী রুস্তম আলী তার লাউ (কদু) চুরির বিষয়ে কথা আছে বলে ভিকটিম বিলুকে তার বাড়ির কর্মচারি জাকারিয়ার মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃত আসামী আব্দুল আজিজের ভগ্নিপতি ঈশ্বরপুর বাজারের নিজাম উদ্দিনের ছাপড়া ঘরের উত্তর পাশে ডেকে নিয়ে আসে। এ সময় অন্যান্য আসামীরা ওই জায়গায় বিলুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি, দা ও কুড়াল নিয়ে ওঁৎ পেতে ছিল। এসময় ভিকটিম বিলু ও তার কর্মচারি জাকারিয়ার সাথে আসামী কাদির ও তার ভাই ছাদিরের লাউ (কদু) চুরি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে আসামি ফালার তার হাতে থাকা কুড়াল দিয়ে নিহত বিলুর মাথার পেছনে আঘাত করে। পরে জীবন বাঁচাতে ভিকটিম দৌড়ে স্থানীয় জাতিন্দ্র বাবুর জমি পার হওযার সময় পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা অভিযুক্ত আসামীরা তাকে পেছন থেকে ধরে এলোপাতারি কোপাতে থাকে। এসময় অপর আসামি ফালান কুড়াল দিয়ে বিলুর বুকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামি আব্দুল আজিজ ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে।
এ ঘটনার পর থেকে আসামি আব্দুল আজিজ দীর্ঘ ২৭ বছর নাম পরিচয় গোপন করে নরসিংদীর শিবপুরের মৈশাদি গ্রামের শ্বশুর বাড়ীতে পলাতক ছিল। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর আসামি আজো পর্যন্ত কোনোদিন তার স্থায়ী ঠিকানা কালীগঞ্জের বাড়িতে যাননি। এ ঘটনায় জড়িত ৮ জন আসামি জেল হাজতে রয়েছে। অপর তিন আসামি ফালান, আলম এবং মানিক পলাতক রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ উত্তরা ও আশেপাশের পূর্বাচল, রূপগঞ্জ এবং নারায়নগঞ্জের র্যাব সদস্যদের সহযোগীতায় রবিবার মধ্য রাত আড়াইটায় নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাধাররচর ইউনিয়নের মৈশাদি গ্রামের শ্বশুর বাড়ী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এএজেড