আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের ক্যাডার! শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রভাষকের হুমকি
ছবিঃ ঢাকাপ্রকাশ
নওগাঁয় ছাত্রদলের সাবেক ক্যাডার পরিচয় দেয়া এক শিক্ষকের হুমকি দেয়ার অডিও ভাইরাল হয়েছে। অডিওতে নজরুল ইসলাম বাচ্চু নামে ওই কলেজ শিক্ষককে পত্নীতলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমানকে হুমকি দিতে শোনা যায়। এক মিনিট ১৩ সেকেন্ডের ভাইরাল হওয়া ওই অডিওতে নানাভাবে হুমকি দেন ঐ শিক্ষক।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, 'আপনার ভাগ্য ভালো। আমার কলেজে এসেছেন আমার খোঁজ করেছেন হুমকি দিয়ে গিয়েছেন। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডার। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের ক্যাডার। আমার নাম নজরুল ইসলাম বাচ্চু। আমি কিন্তু রাজপথের লড়াকু সৈনিক। এরশাদ আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকার একজন। মানে সেই রকম ক্যাডার ছিলাম আমি। আপনি জানেন তারেক রহমানের সঙ্গে আমার কি সম্পর্ক। কথাবার্তার একটা পর্যায়ে শিক্ষা অফিসে আসারও হুমকি দেন কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম বাচ্চু।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নজরুল ইসলাম বাচ্চু চৌরাট শিবপুর বরেন্দ্র কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রায় তিন মাস আগে ওই কলেজের প্রিন্সিপাল দীপক কুমারের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা অনিয়মের একটি অভিযোগ যায় উপজেলা প্রশাসনের কাছে। অভিযোগ তদন্তে গঠন করা হয় ৩ সদস্যের কমিটি। যেখানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়। কিন্তু সেই অভিযোগের এখনও তদন্ত শুরু হয়নি। এতেই ক্ষোভ জন্ম নেয় নজরুল ইসলাম বাচ্চুর মনে। সেই থেকেই তাদের মনোমালিন্য শুরু হয়।
ভাইরাল হওয়ার রেকর্ডটির বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে সংবাদ মাধ্যমের এর কাছে সত্যতা স্বীকার করেছেন শিক্ষক নজরুল ইসলাম। নিজেকে বিএনপিপন্থী শিক্ষক দাবি করে তিনি বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমান দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি। প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ার পর তিনি বগুড়া এলাকার সন্তান হিসেবে বিভিন্ন সময় গরম দেখান। দীপক প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী কে তিনি ভয়-ভীতি দেখিয়েছেন। যার কারনেই পুরো তদন্ত কাজটি আর এগোইনি।
এদিকে শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমান বলেন, তিনি তদন্তে যাওয়ার জন্য অভিযোগকারী কে ফোন দিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগকারী নিজেই পরে জানিয়েছেন ওই তদন্ত আর লাগবেনা। তাই ওই তদন্তে আর যাওয়া হয়নি। বলেন, তদন্ত কমিটিতে আমি ছাড়াও যুব উন্নয়ন ও সমাজ সেবা কর্মকর্তাও আছেন।
তিনি বলেন, রেকর্ডের বাহিরেও নজরুল ইসলাম তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। তিনি সব কিছু ধৈর্য সহকারে শুনেছেন। সম্প্রতি তিনি ওই কলেজে একটি ল্যাব ভেজিটে গিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।