রাফিকে চাঁদাবাজ উল্লেখ্য করে স্লোগান, দুই সমন্বয়কের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে
ছবিঃ সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ করেছেন। এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের একজন তালাত মাহমুদ রাফির ওপর চড়াও হন। পরবর্তীতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তাকে সরিয়ে দেয়। তবে শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষ রাফিকে চাঁদাবাজ উল্লেখ করে স্লোগান দিতে থাকে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় নগরের প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনের তিন নেতার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ ।
মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, “আজ বিকেলে ‘জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রের’ পক্ষে নগরের বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। পরে ওয়াসায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসকক্ষে আলোচনার জন্য তারা বসেছিলেন। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক রিজাউর রহমান এসে মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। রিজাউর রহমানের সঙ্গে ডট গ্যাংয়ের নেতা সাদিক আরমানসহ অনেকেই ছিলেন। একপর্যায়ে খান তালাত মাহমুদ রাফি, রিজাউর ও সাদিক আরমানের নেতৃত্বে আমাদের অবরুদ্ধ করা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীদের মারধর করেন। এতে সাতজন আহত হয়েছেন।’
রাসেল আহমেদ বলেন, একপর্যায়ে ওই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসকক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। তাঁরা এ ঘটনার বিচার চান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়ক তানভীর শরিফ। তিনি জানান, তিনি আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। শরীরের যে অংশে গুলি লেগেছিল, ঠিক সেখানেই আজ আঘাত করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ সংবাদ সম্মেলন করার সময় প্রেস ক্লাবে এসে হাজির হন কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ও রিজাউর রহমান। এ সময় দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে হট্টগোল হয়। রাসেল আহমেদের সমর্থকেরা রিজাউর ও রাফিকে দেখে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। রিজাউর ও রাফির সমর্থকেরাও পাল্টা স্লোগান দিয়েছেন।
রাফি ও রিজাউর যাওয়ার একপর্যায়ে হামলাকারীদের সঙ্গে বসে সংবাদ সম্মেলন হবে না,এমন কথা বলে উঠে দাঁড়ান মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ ও তার সমর্থকেরা। তারা কনফারেন্স হল ত্যাগ করেন। এ সময় রাফি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। তবে তিনি কথা শেষ করার আগেই স্লোগান দিতে দিতে আবার হলে প্রবেশ করেন মোহাম্মদ রাসেল আহমেদসহ একাধিক নেতা-কর্মী। একপর্যায়ে রাফির কাছ থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। পরে দুই পক্ষই সংবাদ সম্মেলন শেষ না করে বের হয়ে যান।
জানতে চাইলে মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, “সন্ধ্যায় আমাকে এবং মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। এরপর আমরা সহযোদ্ধাদের ফোন করি। তারা পৌঁছানোর পর আমরা বের হই। বেসরকারি ওই প্রতিষ্ঠানের অফিসকক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ ওরফে রাফি ও চবির সমন্বয়ক রিজাউর রহমান।”
রাসেলের বক্তব্যের বিষয়ে খান তালাত মাহমুদ বলেন, “আলোচনা করার সময় আমাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়েছে। এর বাইরে কিছু হয়নি। কাউকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়নি। সবই মিথ্যা। পরবর্তী সময়ে আমরা কী করব, তা নিয়ে আলোচনার সময় সামান্য বাগ্বিতণ্ডা হয়।”
তবে রিজাউর হামলার পাল্টা অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “কাউকে অবরুদ্ধ করা হয়নি। উল্টো আমাদের ৪ জনকে মারধর করা হয়েছে।”