যমুনা রেল সেতু জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথমে উদ্বোধন: রেল সচিব
যমুনা রেল সেতু পূর্ব রেল স্টেশন পরিদর্শনকালে বক্তব্য রাখছেন রেল সচিব ফাহিমুল ইসলাম।
টাঙ্গাইলের প্রমত্ত্বা যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে নবনির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দেশের দীর্ঘতম রেল সেতুর কাজ সম্পন্ন। ইতোমধ্যে কয়েক দফায় ট্রেনের ট্রায়ালও সম্পন্ন করা হয়েছে। চলছে রঙ-তুলি ও সাজসজ্জার কাজ। এখন দেশের উত্তর অঞ্চলের মানুষ দিনক্ষণ গুণছে কবে নাগাদ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে এই নতুন যমুনা রেল পথ।
এ নিয়ে রেল সচিব ফাহিমুল ইসলাম জানিয়েছেন, যমুনা রেল সেতু আগামী জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে উদ্বোধন করা হবে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের যমুনা সেতু পূর্ব রেল স্টেশনের সদ্য নির্মিত আধুনিক ভন ভবন ও প্লাটফর্ম পরিদর্শনকালে তিনি এই কথা জানান। তিনি বলেন- যমুনা বহুমুখী সেতু দিয়ে ট্রেন কম গতিতে চলাচল করলেও রেল সেতু দিয়ে ট্রেন তার পূর্ণ গতিতে যেতে পারবে।
প্রকল্পের মান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে টাঙ্গাইল-গাজীপুর রেললাইনটি ডাবল লেন প্রসঙ্গে সচিব আরও বলেন- রেল সেতুটি যেমন জাইকার সহায়তায় বাস্তবায়ন হয়েছে। ঠিক তেমনি আরও বেশ কিছু প্রকল্প জাইকার সহায়তায় করা হবে। সেই প্রকল্পগুলোর আওতায় জনগণের সুবিধার জন্য টাঙ্গাইল ও গাজীপুর রেল সড়কটি ডাবল লেনের করা হবে। প্রয়োজনে এই সড়কে নতুন ট্রেন সংযুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
এসময় রেলের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন, যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম প্রমুখসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য- ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতি। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে।
এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর বর্তমান সেতুর ৩০০ মিটার উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।
প্রথমে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও, পরবর্তীতে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশিয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।